বাজেটে কালো টাকা সাদা না করার সুপারিশ নাগরিক সমাজের
জাফর আহমদ : আগামী বাজেটে কালো সাদা করার সুযোগ না রাখা ও বিদেশে টাকা পাচার রোধে ব্যবস্থা রাখার দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ইক্যুইটিবিডিসহ ২৫টি অধিকারভিত্তিক নাগরিক সমাজ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
‘নতুন ভ্যাট আইন দরিদ্রের উপর কষাঘাত: আগামী বাজেটে কালো টাকা ও অর্থ পাচার রোধে কর্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা চাই’ র্শীষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় বক্তব্য রাখেন ডেভেলপমেন্ট সিনার্জি ইন্সটিটিউশনের মনোয়ার মোস্তফা, এ্যাকশন এইডের আসগর আলী সাবরি, উপকূলীয় এনজিও জোটের আমিনুর রসুল বাবুল এবং বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের বদরুল আলম। সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাটকে গরিবের জন্য ভয়ানক বোঝা হিসেবে অভিহিত করে এ সব অধিকারভিত্তিক নাগরিক সমাজ সংগঠন। সরকার আইএমএফ’র পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাটের মতো পরোক্ষ করের উপর জোর দিচ্ছে, কিন্তু এই মুহূর্তে সরকারের প্রত্যক্ষ করের উপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন বলে তারা অভিমত প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী বাজেটে কালো টাকা ও অবৈধ অর্থ পাচার রোধে সুনির্দিষ্ট এবং কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা দাবি করা হয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল প্রবন্ধে মো. আহসানুল করিম ১৩টি সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো হলো, বাংলাদেশী নাগরিকদের বা কোন দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পন্ন বাংলাদেশীদের বিদেশে সম্পদ ও ব্যাংক একাউন্ট থাকলে তাকে বিবরণী বাংলাদেশে দিতে হবে; সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের সাথে ব্যাংক লেনদেনের স্বচ্ছতার উপর আন্ত:দেশীয় চুক্তি সম্পাদন করতে হবে; ২০০০ ডলারের উপর যে কোনও কেনাকাটার ব্যবহার এবং এ ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনও নিষিদ্ধ করা; মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যেসব বাংলাদেশী নাগরিক নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে, তাদের সকল অর্থনৈতিক তথ্য পরীক্ষা করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে; রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংকসহ শেয়ার বাজার কেলেংকারীর আত্মসাতকৃত টাকাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির উপর তদন্ত কমিশন ও শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে; সংঘাতপূর্ণ রাজনীতির অপরিহার্য অংশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে, বিশেষ করে গণমাধ্যম, নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বধীন ও শক্তিশালীভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়ে আইনের শাসন কায়েম কতে হবে।
মনোয়ার মোস্তফা বলেন, নাগরিকের ব্যয় করার সক্ষমতা বা এ্যাবিলিটি পে প্রিন্সিপলকে রাষ্ট্র অবহেলা করতে পারে না। ভ্যাট এই নীতিকে লংঘন করে যা সামাজিক গণতন্ত্র ধারণার বিরোধী। আমিনুর রসুল বাবুল বলেন, ভ্যাট আইনের কারণে গরিবের সময় কমে যাবে, যার ফলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। বদরুল আলম বলেন, নতুন ভ্যাট আইন কৃষকের সংকটকে আরও তীব্র করে তুলবে। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ করতে হলে বা নতুন কর আইন প্রণয়নের আগে অবৈধ অর্থ পাচারের পথ বা সুযোগটাকে বন্ধ করতে হবে।