একটু পাশে দাঁড়ান, জেগে উঠবে হাওরবাসী
সৈয়দ রশিদ আলম
অকাল বন্যায় হঠাৎ করেই সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চল বন্যায় তলিয়ে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। অবাক হওয়ার বিষয় এমন একটি বিপর্যয় যেখানে আকস্মিক বন্যার সঙ্গে সঙ্গে হাওরের মাছ যেমন মৃত্যুবরণ করছে তেমনি সে হাওর অঞ্চলে হাঁস এর মৃত্যু হচ্ছে। এই বন্যায় ধান পচে যাওয়াতে হাওরের পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। যার ফলে হাওরের মাছের সঙ্গে সঙ্গে পানিও দূষিত হয়ে পড়ছে। একটি রাজনৈতিক দল অভিযোগ করেছিল, মেঘালয়ের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হাওরের পানিতে মিশে গেছে কিন্তু বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হলো হাওরের পানিতে ইউরেনিয়ামের কোনো অস্তিত্ব নেই। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতির কথাই বলবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা বিপদগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াবেন না এটাও স্বাভাবিক। বলা হয়েছে, হাওরের পানিতে মারাত্মক দূষণ ঘটায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে। ঢাকা থেকে বসে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন তারা কেউ কিন্তু হাওরবাসীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন না, হাওর অঞ্চলেও যাচ্ছেন না। যা বলার ড্রইং রুমে বসেই বলছেন।
দেশবাসী গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন হাওর অঞ্চলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ যারা সরকারি চাকরিজীবী তারা হাওরবাসীর পাশে না দাঁড়িয়ে বর্তমানে কানাডায় ভ্রমণ করছেন। তারা দেখছেন নায়াগ্রা জলপ্রপাত। কিন্তু হাওরের জল তারা দেখছেন না, হাওরবাসীর চোখের জল তারা দেখছেন না। যারা হাওরবাসীর ব্যথা উপলব্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেন তারা কোনো ধরনের প্রচার মাধ্যমের সহায়তা না নিয়ে হাওর অঞ্চলে ছুটে গিয়েছেন। তাদের সাধ্যমতন সহায়তা করে যাচ্ছেন। হাওরবাসীর এই বিপর্যয় যেন কাটিয়ে উঠতে পারে এ কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি নিজেই হাওর অঞ্চলে ছুটে গিয়েছেন। বিপর্যস্ত মানুষের যন্ত্রণা দূর করার জন্য যা যা করার তাই করছেন। কিন্তু বিত্তবান মানুষ ও বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলো যদি একইসঙ্গে হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ান তাহলে আমাদের বিশ্বাস তারা নতুন করে জেগে উঠবেন। তাদের ভেতর লড়াই করার মনোবল তৈরি হয়ে যাবে। আমরা আশা করব, হাওরবাসী যারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন সেই ঋণ পরিশোধের সময়টা যেন অন্তত একটি বছর বাড়িয়ে দেওয়া হোক। অথবা তাদের ঋণ সম্ভব হলে মওকুফ করে দেওয়া হোক।
লেখক: কলামিস্ট/সম্পাদনা: আশিক রহমান