আগে থেকে সম্পর্ক থাকার তথ্য পুলিশের কাছে বনানীতে ২ তরুণী ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ
বিশেষ প্রতিনিধি : বনানীতে দুই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যে তরুণী তাদের সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের সঙ্গে আগে থেকে সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। আর তাদের মধ্যে আগে থেকে সম্পর্ক থাকার কারণে পুলিশ এখন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে তারা একসঙ্গে কবে কোথায় গেছেন, কোন কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও তাদের ওই পুরো নেটওয়ার্কটাই বের করার চেষ্টা করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ আরও খতিয়ে দেখছে, তাদের মধ্যে কিভাবে পরিচয় হয়েছিল। গত দুই বছরে তাদের মধ্যে কি কি ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃতপক্ষে ওই দিন কি কি হয়েছে। এছাড়াও ওই গ্রুপটি অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে।
সূত্র জানায়, সাদমান সাকিবের সঙ্গে ওই দুই তরুণীর প্রায় দুই বছর ধরে সম্পর্ক। তারা একসঙ্গে গুলশানের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও পার্টিতেও যোগ দিয়েছে। সেই সঙ্গে তারা একসঙ্গে ড্রিঙ্কও করতো। দুই তরুণী ডিজে হিসেবেও কাজ করে।
আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে, সাদমান সাকিবসহ অন্যান্যরা একটি গ্রুপ ছিল। তারা একসঙ্গে প্রায় বিভিন্ন তরুণীদের নিয়ে বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্টে যান। আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। পুলিশ সেই সব তথ্যও সংগ্রহ করছে।
এদিকে সাদমান সাকিব পিকাসো রেস্টুরেন্টের মালিকের ছেলে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই ব্যাপারে গুলশানের পিকাসো রেস্টুরেন্টের তরফ থেকে জানানো হয়, সাদমান সাকিব নিজেকে পিকাসো রেস্টুরেন্টের মালিক বলে দাবি করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি রেস্টুরেন্টের মালিক নন। তার বাবা মোহম্মদ ওরফে জনি ওই রেস্টুরেন্টের বাড়ির মালিক। পিকাসো রেস্টুরেন্টটি ওই বাড়ির তিনটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে ওই রেস্টুরেন্টটি গড়ে তুলে। বাড়ির মালিকানা থাকার কারণে ওই রেস্টেুরেন্টের সঙ্গে জনি বাড়ি দেওয়ার বিনিময়ে প্রফিট শেয়ারের মালিকানা রয়েছে। এই অবস্থায় তারা ওই হোটেলের মালিকানা দাবি করে আসছে।
ওই হোটেলের মালিক ৫-৬ জন। এরমধ্যে একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী একজন। সেই হিসেবে ওই রেস্টুরেন্টে জেনারেল মাসুদ যান। আর সেটা জেনারেল মাসুদের রেস্টুরেন্ট হিসেবেই পরিচিত। সাদমান সাকিব নিজেকে পিকাসোর মালিকের ছেলে হিসেবে পরিচয় দেওয়ায় ওই তরুণীরা পিকাসো রেস্টুরেন্টের মালিক ছেলে হিসেবেই চেনে। ওই তরুণী মামলার এজাহারে সাদমান সাকিবের বাবাকে পিকাসো রেস্টুরেন্টের মালিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
এই ঘটনায় জেনারেল মাসুদের পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সাদমান সাকিব নামে তাদের কোনো ছেলে নেই। তার সঙ্গে তাদের কোনো পারিবারিক সম্পর্কও নেই। সাদমান সাকিবের বাবা জেনারেল মাসুদ নন। জেনারেল মাসুদের একমাত্র ছেলে আদর। তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। সেখানকার নাগরিক ও সেখানেই তিনি কর্মরত।
জেনারেল মাসুদের পরিবারের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, সাদমান সাকিবকে তার ছেলে হিসেবে কিছু কিছু গণমাধ্যম পরিচয় তুলে ধরেছেন। যার কোনো সত্যতা নেই। এটা কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেও করতে পারে। এছাড়া সাদমান সাকিবের বাবা জনি পিকাসো রেস্টুরেন্টে কোনো ইনভেস্ট করেননি। কেবল বাড়ি ভাড়া দিয়েছেন।
এদিকে জেনারেল মাসুদের পরিবারের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, তারা বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন। তারা আগামী ১২ মে দেশে ফিরবেন।
সূত্র জানায়, পিকাসো রেস্টুরেন্টের তরফ থেকেও এই সব তথ্য পুলিশের কাছে জানানো হয়েছে। পুলিশ এখন সাদমান সাকিবকে খুঁজছে। তার অন্যান্য বন্ধুদেরও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।