দুদকের অকৃত্রিম বন্ধু মিডিয়া : দুদক চেয়ারম্যান
জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না : দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের অকৃত্রিম বন্ধু হচ্ছে মিডিয়া। মিডিয়ার আকুন্ঠ সমর্থন আমরা পাচ্ছি। সাংবাদিকরাই আমাদের বড় বন্ধু। দুদকেরও একটি জবাবদিহি থাকা দরকার। মিডিয়ার কাছেই আমরা জবাবদিহি করতে চাই। গতকাল বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন কমিশন, পিআইবি ও জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড এর যৌথ উদ্যোগে “দুর্নীতি প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তথ্য কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার, দুদক মহাপরিচালক ড. মো. শামসুল আরেফিন, পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, বাসস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, যুগান্তর এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ. ই মামুন। মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, এস এ টিভির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইলিয়াস হোসেন, আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র রিপোর্টার জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি নিজে একজন সাবেক আমলা হিসেবে বলছি, আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমলাতন্ত্র। সিভিল সার্ভিস এ্যাক্টসহ যে কোনো সংস্কারই আমলাতন্ত্রের ‘‘ব্লাক হোলে’’ হারিয়ে য়ায়। সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কচ্ছপ গতিতে চলা আমলাতন্ত্রের কারণেই ভালো কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমাদের পদ্ধতিগত পরিবর্তনে মনোনিবেশ করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল হাওরের দুর্নীতি নিয়ে ছোট্ট একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। আমি ওইদিনই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন চাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে কমিশনের সচিব ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ১০ দিনের পরিবর্তে ১০ মাস পরে অসম্পূর্ণ একটি প্রতিবেদন কমিশনে পাঠায়। যদি প্রতিবেদনটি যথাসময়ে কমিশনে পাঠানো হতো, তা হলে হয়তো হাওরে এ বছরের বিপর্যয় ঠেকানোর চেষ্টা আরও দৃঢ় হতো।
তিনি আরো বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয় অর্থ এবং পেশীশক্তি সারা বিশে^র সমস্যা। এ দুই ‘এম’ ( গঙঘঊণ অঘউ গটঝঈখঊ) হতে মিডিয়াকে মুক্ত করার চেষ্টা আমাদের সম্মিলিতভাবেই করতে হবে। এ সময় তিনি মিডিয়াকে মুক্ত রাখতে একটি কমিটি করার প্রস্তাব দেন।
বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে ৫৬টি মামলা করা হয়েছে। অনেকে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন। কোনো কোনো ঋণ নিয়মিতকরণ করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে আটকিয়ে রাখা নয়। বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তদন্তাধীন। তাই এ বিষয়ে এই মহূর্তে কোনো মন্তব্য করব না। আরো কিছু মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, সরকারি ব্যাংক কিংবা বেসরকারি সকল ব্যাংকের অর্থই জনগণের আমানত। আমরা জনগণের আমানত খেয়ানত হতে দিতে পারি না। তাই আমার অনুরোধ, যারা অবৈধভাবে ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়েছেন সে অর্থ নিজ উদ্যোগে ফেরত দিন এবং যারা অবৈধভাবে অর্থ প্রদান করেছেন তারা সে অর্থ আদায় করুন। আমরা জনগণের অর্থ আত্মসাতকারীদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেব না।