বিদেশগামী ভাই ও বোনেরা : সাবধান!
রহমান শেলী
একটি নতুন অপরাধ চক্রের তথ্য দিচ্ছি। যখন যাত্রীরা বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমানে উঠেন, তখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল সচেতন থাকে না। তখন অপরাধীরা এ সুযোগটি নিয়ে থাকে। কীভাবে নিয়ে থাকে? যাত্রীর যেকোনো কাছের আত্মীয়কে ফোন দিয়ে বলে, আপনার যাত্রী ওমুক প্লেনে ওঠতে পারেননি। সে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হারিয়ে ফেলেছে। সে আমাদের কাছে আছে। দ্রুত এক লাখ টাকা পাঠান। তখন স্বাভাবিকভাবেই আত্মীয়-স্বজনের মাথা নষ্ট হওয়ার অবস্থা হয়!
অপরাধীরা এরপর বলবে, সময় নষ্ট করলে কিন্তু সে আর যেতে পারবে না। একটা বা দুইটা বিকাশ নম্বর দিবে। বলবে, এ নম্বরে দ্রুত টাকা পাঠান। তারপর বলবে, কথা বলবেন আপনার আত্মীয়র সঙ্গে? আত্মীয় স্বাভাবিকভাবে বলবেন, ভাই দিন। এরপর একজনকে দিবে। সে পাগলের মতো হাউমাউ করে কাঁদতে থাকবে। যাতে তার কণ্ঠ স্পষ্ট না বোঝা যায়। তারপর তার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে বলবে, ভাই এত কাঁন্না করলে হবে? একটু চুপ থাকেন। টাকা পাঠাতে বলেছি। টাকা পাঠালে যেতে পারবেন। তারপর আত্মীয়কে বলবে, শুনলেন তো যাত্রীর কী অবস্থা? যদি আত্মীয় বলেন, এত টাকা তো এখন নেই। তখন বলবে, কত আছে? বলবে হয়তো, ২০-৩০ বা ৬০-৭০ হাজার টাকা আছে। যাই বলুক। বলবে, দ্রুত টাকাটা বিকাশ করুণ। বাকিটা আমরা দেখছি। তারপর আপনি টাকা পাঠালেন। আর অপরাধীরা মোবাইল বন্ধ করে একটা বড় হাসি দিবে এবং অপেক্ষায় থাকবে বাকি টাকার জন্য।
কীভাবে অপরাধীরা আপনার ফোন নম্বর পেয়ে থাকে? ভিসা লাগানোর সময় থেকে টিকেট কাটা এবং এয়ারপোর্টে বোর্ডিং ও ইমিগ্রশন পর্যন্ত যেকোনো সময় অপরাধীরা যাত্রী ও তার কাছের আত্মীয়র নম্বর পেয়ে থাকতে পারে। তবে ধারণা করা হয়, যেহেতু ইমিগ্রেশন হওয়ার পর এ চক্রটি কাজ করে, তখন ধরে নেওয়া যায়, এরা ফ্লাইট শিডিউল ফলো করে।
কীভাবে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? এক. অপ্রয়োজনে নম্বর চাইলে না দেওয়া। দুই. অপরিচিত কেউ ভুল তথ্য দিয়ে আপনাকে বিব্রত করতে পারে। তখন দ্রুত সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করুন। তিন. কেউ ফোন দিয়ে টাকা চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনার সচেতনতাই আমাদের কাম্য। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, ঢাকা। ডিউটি এএসপি: ০১৭৬৯৬৯০৭৪৫।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও এডিশনাল এসপি
সম্পাদনা: আশিক রহমান