রাজশাহীতে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে অস্বীকার করার অভিযোগ
আফজাল হোসেন, রাজশাহী: বয়স ৬৫-৬৮ বছরের মতো। পরিচিতির দিক থেকে রাজশাহীসহ সারাদেশের মানুষ তাকে ভালই চিনেন এবং জানেন। রাজনৈতিকভাবে হেনহমক হলেও তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রমান করে দিলেন তিনি আসলে বাস্তবে কী? এই বয়সে গোপনে বিয়ে করার পর স্ত্রীকে অস্বীকার করায় তিনি এখন মুখোরোচক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলেন। রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামির সাবেক আমীর ও কেন্দ্রের কর্মপরিষদ সদস্য আতাউর রহমান। জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিতি থাকলেও তিনি শিক্ষকতাও করতেন। গত বছরের ১১ এপ্রিল তিনি রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লক্ষ্মীপুর শাখার আয়া রশিদা বেগমকে গোপনে বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি না পেয়ে সম্প্রতি বিষয়টি ফাঁস করে দিয়েছেন রশিদা বেগম নিজেই। বিষয়টি তিনি ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছেন বলে রশিদার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
রশিদার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল নগরীর রাজপাড়া থানার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিবাহ রেজিস্ট্রার আব্দুর সাত্তারের নিকট দুই লাখ টাকা দেনমোহরে রশিদাকে বিয়ে (কাবিন নামা নম্বর ০৬/২০১৬) করেন জামায়াত নেতা আতাউর রহমান। কিনমশ বিয়ের এক বছর পার হয়ে গেলেও রশিদা বেগমকে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হয়নি।
সম্প্রতি রশিদা বিয়ের প্রমানপত্রসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জামায়াতের নেতাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। যার কপি গইমাধ্যমকর্মীদের কাছেও দেয়া হয়।
গত ২ মে রাত ৮টার দিকে রশিদা স্বামীর স্বীকৃতির দাবিতে আতাউর রহমানের বাড়িতে যান। কিন্তু তিনি স্ত্রী হিসেবে রশিদাকে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে হৈচৈ শুরু হলে ¯’ানীয় লোকজন গিয়ে রশিদার বিয়ের কাবিন নামা দেখে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানায়। পরে স্থানীয় জামায়াত নেতারা গিয়ে আতাউর রহমানের পরিবারের সদস্যদের মধ্যস্থতা করে তাৎক্ষণিক রশিদাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বুঝিয়ে ওই রাতেই রশিদাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এর পর গত এক সপ্তাহেও রশিদাকে ঘরে তুলেননি। এ ব্যাপারে ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও জামায়াত নেতাদের সহযোগিতা চেয়ে গত রোববার আবেদন করেছেন রশিদা বেগম।
কাজীর সহকারী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিপদের সময় আতাউর রহমানকে আশ্রয় দিয়েছেন রশিদা। এক পর্যায়ে উভয়ের সম্মতিতে যথা নিয়মে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তিনি নিজে বিয়ে পড়িয়েছেন। কিন্তু এখন আতাউর রহমান বিয়ে অস্বীকার করে রশিদাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছেন বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে জামায়াতের এই প্রবীণ নেতা আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রশিদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি তার কর্তৃপক্ষ ও জামায়াতের নেতাদের জানানো হয়েছে। স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান রশিদা। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান