এক ফায়ার সার্ভিস সদস্য ও ৫ জঙ্গি নিহত রাজশাহী গোদাগাড়ীর জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন সান ডেভিল’ সমাপ্ত
রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বেনীপুরে জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন সান ডেভিল’ সমাপ্ত ঘোষাণা করেছে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ। গতকাল শুক্রবার দুপুর পৌনে একটার দিকে তিনি অনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এরা বড় ধরনের জঙ্গি। পরিবার এদের লাশ নিবে না। নিহত জঙ্গি আসরাফুল আইটি বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
এর আগে গোদাগাড়ী থানার ওসি হিফজুর আলম মুন্সি বলেন, জঙ্গিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতনন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, লাশে পঁচন ধরে র্গন্ধ ছড়াতে শুরু করায় উদ্ধার কর্মীরা কেরোসিন ও নাকে-মুখে গামছা দিয়ে জঙ্গিদের লাশ উদ্ধারের কাজ করে বলে জানা গেছে। এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) সুমিত চৌধুরী সকালে সাংবাদিকদের জানান, এ জঙ্গি আস্তানা থেকে একটি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন ও ১১টি বোমা, জিহাদী বই ও গান পাউডার উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাড়ির ভিতরে আর কোনো জঙ্গি পাওয়া যায়নি। বোমা নিস্ক্রয়কারী দল এবং সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা বাইরে পড়ে থাকা নিহত জঙ্গিদের লাশ উদ্ধার করেছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উপজেলার বেনীপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলী ওরফে মিস্টুর (৫০) বাড়িটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ভেতরে থাকা জঙ্গিদেও মাইকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু জঙ্গিরা তাতে সাড়া দেয়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাড়িতে পানি স্প্রে করা শুরু করে। এ সময় জঙ্গিরা বাড়ি থেকে বের হয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। নারী জঙ্গিরা প্রকাশ্যে বল্লম দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবদুল মতিনকে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে বাড়ির মালিক সাজ্জাদ হোসেন (৫০), তার স্ত্রী বেলী বেগম (৪৫), তাদের ছেলে সোয়াইদ (২৫), আল-আমিন (২০) ও মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭) ও বহিরাগত আশরাফুল নিহত হয়। আশরাফের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের দেবীপুর বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযানে সাজ্জাদের মেয়ে সুমাইয়া পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় সুমাইয়ার দুই শিশু সন্তানকেও।
নিহত মতিনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকার অনুদান দেয়ার ঘোষণা: রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নের মাছমারা বেনীপুর গ্রামে জঙ্গি হামলায় নিহত দমকল বিভাগের কর্মি আব্দুল মতিনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকার অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম (বিপিএম)। পুলিশ পরিবারের পক্ষ থেকে এ অনুদান দেয়া হবে। রাজশাহী দমকল বিভাগ সদর দপ্তরের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে জঙ্গি হামলায় নিহত দমকল বিভাগের কর্মি আব্দুল মতিনকে দেখতে আসেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম (বিপিএম)। এসময় তিনি আব্দুল মতিনের পরিবারের সামনে এ ঘোষণা দিয়ে যান। পুলিশ কমিশনার ছাড়াও হাসপাতালে আব্দুল মতিনের লাশ দেখতে যান রাজশাহীর জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিন। সম্পাদনা: মাহাদি