রোজার আগেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার কারণ ছাড়া বেড়েই চলছে চাল, চিনি ও রসুন
মাসুদ মিয়া: পবিত্র রমজান মাস আসতে আরও ১৩ থেকে ১৪দিন বাকি আছে। এর আগেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ ছাড়াই বেড়েছে চাল, চিনি ও রসুনের দাম।
বরাবরের মতো এ বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা দোষ চাপাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের ওপর। গতকাল শনিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাল, চিনি, গরুর মাংস ও রসুনের দাম বেড়েছে কোনো কারণ ছাড়াই। অন্যদিকে, মিশ্রভাব বিরাজ করছে মাছ ও সবজির বাজারে। তবে ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে মোটা চাল কেজিতে নতুন করে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে। চিকন চালেও একই অবস্থা। পারিজাত চাল গত সপ্তাহে ৪৪ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪৬ টাকা কেজি দরে। ‘২৮ চাল’ গত সপ্তাহে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকার মধ্যে থাকলেও এ সপ্তাহে এসে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজিতে। গুটি স্বর্ণা গত সপ্তাহে ৪৩ টাকা কেজি থাকলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ টাকায়। এ ছাড়া সব ধরনের মিনিকেট চালে কেজিতে বেড়েছে ১ টাকা। গত সপ্তাহে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৩-৫৪ টাকা কেজি দরে। এ সপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা। এ বিষয়ে পিরেরবাগ বাজারের চাল বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘চালের দাম বৃদ্ধির সঠিক কোনো কারণ আমরা জানি না। এ ব্যাপারে পাইকারি ব্যবসায়ীরাই ভাল বলতে পারবেন। গত সপ্তাহে রাজধানীর খোলা বাজারে চিনি ৬৫ টাকা থেকে ৬৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা কেজিতে । এ ছাড়া গত সপ্তাহে গরুর মাংস ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে এসে তা ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কাওরান বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গরুর দাম বাড়তি এবং চামড়ার দাম কম থাকায় এর প্রভাব পড়েছে মাংসের বাজারে।
তবে খাসি ও বকরির মাংস বিক্রি হয়েছে আগের দামেই। অর্থাৎ, খাসি ৭০০ টাকা এবং বকরি ৬৫০ টাকা কেজি দরে।
বাজারে আমদানি করা রসুন গত সপ্তাহে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা কেজিতে। দেশি রসুনের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী।
বাজারে দাম বাড়েনি ব্রয়লার মুরগির। গতকাল এই মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ১৬০ টাকা কেজিতে। দেশি ও কক মুরগির দামও স্থিতিশীল রয়েছে।
অন্যদিকে, কমেছে ডিমের দাম। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ১২টি (এক ডজন) ৮৫ টাকায়। আর হাঁসের ডিম বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকা ডজন।
বাজারে মাঝারি আকারে এক জোড়া ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে ১২শ’ টাকায়, রূপ চাঁদা বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকা থেকে সাড়ে ৯০০ টাকায় (আকার ভেদে দাম কম বা বেশি হয়ে থাকে)। রুই-কাতলা ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজির মধ্যেই বিক্রি হয়েছে। গলদা চিংড়ির কেজি ছিল ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। পাঙ্গাস ১০০ থেকে ১২০ টাকা, নলা মাছ ১৮০ টাকা এবং সিলভারকাপ ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। আলু বিক্রি হয়েছে ১৭ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮ টাকা। পটল ৪০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। করলা বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। বেগুন ৫০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল একই। বরবটি ৪০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা কেজি। ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা। শশা ২৫ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা। ঝিঙে ৫০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল একই।