দুই শিক্ষার্থী ধর্ষিত এবং আমাদের করণীয়
খুশী কবির
দেশে ধর্ষণের ঘটনা প্রায় ঘটতে দেখা যাচ্ছে। বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণমাধ্যমে দেখলাম এখানে ধর্ষকের বাবা পর্যন্ত প্রভাব খাটাচ্ছেন। তাদের টাকা আছে, প্রভাব আছে। এটা অত্যন্ত অন্যায়। আমরা মনে করি, এটা একজন নারীর নিরাপত্তা, নিজের অবস্থান, নারীর ক্ষমতায়নের উপর, আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব এবং আমাদের নিরাপত্তা, আমাদের আত্মসম্মান বোধ সবটাকে একেবারে ধুলিস্যাৎ করে দিচ্ছে, যখন বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর বক্তব্য ওরা দেয়।
ধর্ষণের বিচার যে একেবারে হয় না সেটা বলব না। কিছু তো দেখা যায়। কিন্তু ধর্ষকদের বিচারে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেটা আমরা দেখছি না। থানায় মামলা নেওয়া থেকে শুরু করে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং কোর্ট পর্যন্ত সবকিছুতে। আমাদের সামাজিক বাস্তবতায় একজন নারী কখন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যায়, যখন সে একেবারে আর পারছে না, নিজের জীবন যখন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে তখন। কেননা ধর্ষকেরা তো বারবার ভয়ভীতি দেখাচ্ছিল। অনেক ধরনের সাইবার ক্রাইমের কথাও বলছিল। ইয়াসমিনের কথা যদি স্মরণ করি তাহলে দেখব সেখানে ধর্ষণ এবং হত্যা দুটোই প্রমাণিত হয়েছিল। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসিও হয়েছিল। এ রকম দু-একটা যে ঘটেনি সেটা না। কিন্তু সংখ্যায় খুব কম। কেননা বিচারের জন্য যে প্রমাণগুলো দরকার সেটা সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয় না। আর পুলিশও ঠিকমতো কেসটা সাজাবে সেটাও তারা করে না।
ধর্ষণ অপরাধের বিচারে আমাদের আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগে দুর্বলতা আছে। আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয় না। আইনের প্রয়োগ যাতে নিশ্চিত করা হয় সেদিকে আমাদের নজর দেওয়া দরকার। অন্যায়, অনাচার, অপকর্মকা-ের বিরুদ্ধে আমাদের জেগে উঠতে হবে। এমন গর্হিত কাজ সমাজে ঘটতে দেওয়া যায় না। কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে এই ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী মানুষদের বিরুদ্ধে। সম্মিলিতভাবে প্রয়াস চালালে দুর্বৃত্তমুক্ত বাংলাদেশ হবেই। তাই আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সবার ঐক্যবদ্ধতা ছাড়া উন্নত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা অত্যন্ত কঠিন হবে আমাদের জন্য।
পরিচিতি: মানবাধিকারকর্মী
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান