আমার কিছু প্রশ্ন আছে
অ্যাডভোকেট জাহিদ আহমেদ হিরো
বনানীর একটি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষিত হওয়ার সংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমরা জেনেছি। বিবেকবান মানুষ হতভাগ হয়েছেন। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে আমারও। বেদনায় নীল হয়েছে ভেতরটা। প্রশ্ন জাগেÑ আমরা এ কোন সমাজে বাস করছি, যেখানে দুজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে গণধর্ষণের শিকার হতে হবে? ঘটনাটি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আমার মনেও জেগেছে নানা প্রশ্ন। জানি না প্রশ্নগুলোর উত্তর পাব কি না। তারপরও জানতে ইচ্ছে করেÑ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা কেন ওই সময়ে একটি আলো আঁধারের মূর্ছনায় ঘেরা উন্মাদনার আবহে তৈরি করা একটি ব্যয়বহুল হোটেলে যাবে? বলছি না তারা ওখানে যেতে পারবে না। তারা সেখানে যেতেই পারে, খাদ্যের রসনায় অথবা ভোজন রসিক হিসেবে গিয়েছে, কিন্তু তাদের কি কোনো অভিভাবক নেই বা ছিল না?
যদি তারা কোনো ছাত্রী হোস্টেলে থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তার সুপারভাইজার বা পরিচালক থাকবেন, আর যদি তারা বাসায় থাকে তাহলে অবশ্যই বাবা, মা অথবা ভাই অভিভাবক হিসেবে থাকবেন। সেখানে তাদের অভিভাবকদের ভূমিকা কি ছিল? আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যাদের নাম এসেছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, তারা যে খুবই উচ্চবিত্ত বা তথাকথিত অভিজাত পরিবারের সন্তান তা তাদের পরিচয় থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তাহলে তারা কেন এই ঘৃণ্য ঘটনার অনুঘটক হবে? আর এই ঘটনাটি যে হোটেলে ঘটেছিল, সেই রেইনট্রি হোটেলের মালিক বা পরিচালকের ভূমিকাই বা কি ছিল? এ প্রশ্নগুলোর জবাব কে দেবে? সমাজ, না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, না হোটেল কর্তৃপক্ষ।
দেশে তারকাযুক্ত হোটেল-রেস্টুরেন্ট আছে কিন্তু এগুলোর যথাযথ মনিটরিং কি হচ্ছে প্রচলিত আইনি অবকাঠামোতে? জানি আমার এই প্রশ্নগুলো শুধু প্রশ্নই থেকে যাবে, হয়তো উত্তর পেতে পেতে আবারও নতুন কোনো খবরের শিরোনাম হবে গণমাধ্যমে! নিরাশা ছেড়ে আশাবাদী হই। আশা করছি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সঠিক বিচার হবে।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সম্পাদনা: আশিক রহমান