শেবাচিমের জব্দ ওষুধের মূল্য ১৫ লাখ টাকা, সেবিকা আটক
বরিশাল প্রতিনিধি: শেবাচিম হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে নিয়ম বর্হিভূতভাবে মজুত করে রাখার পর জব্দকৃত সরকারি ওষুধের মূল্য ১৫ লাখ টাকারও অধিক। গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম।
অপরদিকে শনিবার এ ঘটনায় আটক করা ওই ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স বিলকিস বেগমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ওষুধ চুরির ঘটনার নেপথ্যে কারা জড়িয়ে সে নিয়েও মাঠে কাজ করছেন পুলিশ। সূত্রমতে, শুক্রবার চতুর্থ শ্রেণির কোয়ার্টারের পুকুরে সরকারি ওষুধ ভাসতে দেখে লক্ষাধিক টাকার ওষুধ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের আয়া শেফালী বেগম ও তার পুত্র মামুনকে পুলিশ আটক করে। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী শনিবার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ইনচার্জ বিলকিস বেগমের কক্ষ থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ১৫ লাখ টাকার মূল্যের ওষুধ উদ্ধার করে। একইসময় বিলকিস বেগমে আটক করা হয়। নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সাইফুল্লাহ মো. নাছির বলেন, আদালতে পুলিশ বিলকিস বেগমের রিমান্ড চাইবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে ওষুধ চুরির ঘটনার নেপথ্যে কারা জড়িত তাদের বিষয়ে জানতে পারা যাবে।
তবে পুলিশ মাঠে রয়েছে এবং আরো ওষুধ মজুদ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বলেও উল্লেখ করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শেবাচিম হাসপাতালের বর্হিঃবিভাগ থেকে ৯৫ ধরণের ও ভর্তিরত রোগীদের জন্য সরকারীভাবে ৩০৮ প্রকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। ওই ওয়ার্ডে ভর্তিরত একাধিক রোগীরা বলেন, তারা ওষুধ চাইতে গেলে নেই বলে ফিরিয়ে দেয়া হয়। বাধ্য হয়েই তারা বাইরে থেকে ওষুধ ক্রয় করে থাকেন।
নার্সিং সুপারভাইজার মমতাজ বেগম বলেন, সরকারী ওষুধ রোগীদের না দিয়ে তা জমিয়ে রাখেন ইনচার্জ বিলকিস বেগম। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ওষুধ ইনচার্জ বিলকিস বেগম রোগীদের না দিয়ে তা অবৈধভাবে মজুদ করে হাসপাতালের আয়া শেফালী ও তার পুত্র মামুনের সহযোগীতায় বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করতো। তবে এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড ইনচার্জ বিলকিস বেগমের কক্ষে অবৈধভাবে মজুদ করা ২২ আইটেমের ১৫ লাখ টাকারও অধিক মূল্যের ওষুধ পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি সময়ে হাসপাতালের সামনের সকল ওষুধের দোকানিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন কোন দোকানে সরকারি ওষুধ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য হাসপাতালের আয়া শেফালীর কাছে মজুদ করা সরকারী ওষুধ বিক্রি করতে না পেরে অবশেষে পুকুরে ফেলে দেয়া হয়।
যার রেশ ধরে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে অভিযান চালিয়ে ওয়ার্ড ইনচার্জ বিলকিস বেগমের কক্ষ থেকে ২২ আইটেমের সরকারী হিসেব অনুযায়ী ১৫ লাখের অধিক টাকা দামের ওষুধ জব্দ করা হয়। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান