প্রবৃদ্ধির হিসাবে অর্থনীতির সঠিক প্রতিফলন নেই
বিশ্বজিৎ দত্ত : সরকারের প্রবৃদ্ধির হিসাবে দেশের অর্থনীতির সঠিক প্রতিফলন নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। গতকাল অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজ সরকারের প্রবৃদ্ধির হারের সমালোচনা করে বলেন, গত ২ বছর ধরেই সরকারের প্রবৃদ্ধির হিসাবের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য সংস্থার হিসাবের মিল হচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশে রেমিটেন্স কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ। রপ্তানিও কমছে। ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধিও ১৫ থেকে ১৬ শতাংশে আটকে আছে। দেশে হাওর অঞ্চলে কৃষির ক্ষতি হওয়ার পরেও সরকারের ৭ দশমিক ২৪ প্রবৃদ্ধির হিসাব মিলছে না। আমি বিশ্বব্যাংকের হিসাবকেই সঠিক হিসাব বলে মনে করি। অর্থনীতির এই নেগেটিভ অবস্থার মধ্যেও সরকার কোন হিসাব নিয়ে প্রবৃদ্ধির এই হিসাব করছে এ প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। তবে মনে হয় সার্ভিস সেক্টরের হিসাব নিয়ে তারা প্রবৃদ্ধির হিসাবকে দেখছে। কারণ অর্থনীতিতে এখন সার্ভিস সেক্টরের অবদান ৫০ শতাংশের উপরে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারের রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ের পতনে সরকারের এই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। এর আগে এডিবিও তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বলে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল।
অর্থনীতিবিদ আরএম দেবনাথ বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে এটি খুবই গর্বের কথা কিন্তু এটাকে অতি উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখানো গর্বের নয়। প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে বিশ্বের মাত্র কয়েকটি দেশ অর্জন করতে পেরেছে। বাংলাদেশও এই গর্বের অংশীদার। কিন্তু বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। বিশ্ববাজারের অবস্থা ভাল নয়। গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছিল। এর সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখন অবস্থা আগের মতো নয়। বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বাড়ছে। দেশেও বিশ্ববাজারের প্রভাব পড়বে। চালের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চালের সঙ্গে অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক। আর প্রবৃদ্ধির সূচক নিয়ে যাই বলা হোক মূল্যস্ফীতি এমন এক রাক্ষস যেকোনো দেশের বিকাশমান অর্থনীতি যেকোনো সময় খেয়ে ফেলতে পারে। আমাদের কাছে সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো, ভেনেজুয়েলা। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি