আগস্ট থেকে সপ্তাহে ৪ দিন চলবে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সম্ভাবনা অপার
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মাইলস্টোন। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ও শেখ হাসিনার ভারত সফরে সর্ব সাকুল্যে ৬০টি দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে, এটি কোনও ছোট অর্জন নয়। এটি আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অপার সম্ভাবনার কথা বলে। সম্পর্ক এগিয়ে নিতে উভয় পক্ষের বিপুল রাজনৈতিক আগ্রহ রয়েছে।
গতকাল সকালে ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা হেরিটেজ বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শীর্ষ সম্মেলন ছাড়িয়ে: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সাফল্য’ শীর্ষক সেমিনারে শ্রিংলা এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি ভারত সফর দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। ২০১৫ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট ও মহাকাশ গবেষণার মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র ও ঋণ সহায়তাসহ অন্যান্য চুক্তি দু’দেশের সহযোগিতার আরেক ধাপ অগ্রগতি ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত সূচনা করেছে। হেরিটেজ বাংলাদেশেরর চেয়ারম্যান,প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমদের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
সভায় তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৭৫ এর পর রাজাকার-যুদ্ধাপরাধী সমর্থিত শাসকেরা বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান-আফগানিস্তানের পথে নিয়ে গিয়েছিল। শেখ হাসিনা সেখান থেকে দেশকে গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও উন্নয়নের পথে ফিরিয়ে এনেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক প্রকৃত অর্থে নতুন কোনও বিষয় নয়, সামরিক সহযোগিতার বিদ্যমান ক্ষেত্রগুলোরই প্রাতষ্ঠানিক কাঠামোগত রূপমাত্র। সার্কের পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা পানিসম্পদ প্রকল্প গ্রহণও বাংলাদেশের উন্নয়নে একান্ত প্রয়োজন।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা তার বক্তব্যে আরও বলেন, এ বছরের আগস্ট থেকে ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে চারদিন চলাচল করবে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় যাতায়াত বেড়েছে এবং দুই দেশের ইমিগ্রেশনে যাত্রী ভোগান্তি কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, মৈত্রী এক্সপ্রেস এখন পুরো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রী সেবা দিচ্ছে। শিগগিরই ঢাকা ও কলকাতা ভ্রমণের সময়সীমা কমিয়ে এটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করবে। হর্ষ বর্ধন বলেন, খুলনা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলের জন্য একটি নতুন মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু করার কাজ চলছে, ইতোমধ্যে এটির পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। যাত্রী চলাচল আরও সহজ করার জন্য কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা এবং ঢাকা-শিলং গৌহাটি ছাড়াও খুলনা ও কলকাতার মধ্যে একটি নতুন বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর্যালোচনা করে তিনি বলেন , ২০১৫ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি হয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, বর্তমানে এবং এতে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে পারবো বলে আশা করি।
সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রায় ৫০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা ভাবছি। এর মধ্যে দুটি প্রধান বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে, আদানি পাওয়ার লিমিটেড এবং রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গেস মোট ৩শ ২০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে যা বাংলাদেশে অতিরিক্ত দুই হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। সম্পাদনা : জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না