নারী ও শিশুর অধিকার
রুহুল আমিন ভূঁইয়া
বর্তমান সময়ে আলোচিত ড় সমস্যা হচ্ছে নারী ও শিশু নির্যাতন। যা মহামারী আকার ধারণ করেছে। কুরআন ও হাদিসে নারীর মর্যাদা ও শিশু অধিকারে এসেছে অসংখ্য নির্দেশনা। যার সার-সংক্ষেপ তুলে ধরা হলো- বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অহরহ ঘটে চলেছে নারী ও শিশুর প্রতি অমানুষিক নির্যাতন। অথচ ইসলাম নারী ও শিশুকে দিয়েছে যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান। মা, স্ত্রী, বোন ও কন্যার পরিচয়ে সংরক্ষণ করেছে সব অধিকার। নারীর মর্যাদা নারীরা একে অপরের সাহায্যকারী বন্ধু হওয়া, সৎকর্মশীল হওয়া, অসৎকাজ থেকে বিরত থাকা, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা, বার্ষিক হজ পালন, যাকাত প্রদানসহ ইত্যাদি সামাজিক কর্মকা-ই পুরুষের মতো মহিলাদের ওপরও বাধ্যতামূলক। এর মাধ্যমে তারা তাদের মধ্যে নৈতিক উৎকর্ষ বৃদ্ধি করতে পারে এবং খোদামুখী আধ্যাত্মিক চেতনা গড়ে তুলতে পারে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, অর্থাৎ হে নবী, ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, জারজ সন্তানকে স্বামীর ঔরস থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবি করবে না এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবে না, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল অত্যন্ত দয়ালু। মায়ের মর্যাদায় নারীকে মায়ের মর্যাদা দিতে গিয়ে আল্লাহ বলেন, আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। মায়ের মর্যাদা সম্পর্কে জনৈক সাহাবী জানতে চান কে সবচেয়ে উত্তম আচরণ পাওয়ার অধিকারী। সাহাবীর প্রশ্নের উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনবার জবাব দিলেন “তোমার মা”। সাহাবী ৪র্থ বারের প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন “তোমার পিতা” । নারীকে স্ত্রী মর্যাদায় সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে ইসলাম।
এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তোমারা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে ন্যায়সঙ্গতভাবে জীবন-যাপন কর। অতপর যদি তাদের অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন। এছাড়াও শিশুর মর্যাদা ও অধিকার প্রদানে ইসলামে রয়েছে অনন্য বক্তব্য। কন্যা শিশুর মর্যাদা ও সম্মান প্রদানে আল্লাহর রাসুল অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। শিশু ফাতিমাকে অনেক ভালবাসতেন তিনি। তাইতো তিনি বলেন, ‘শিশুদের ভালোবাস, শিশুরা আল্লাহর পুষ্প। মহান আল্লাহ বলেন “তোমারা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করনা। তাদেরও তোমাদের রিযিক আমিই ব্যবস্থা করি।” আসুন, গোলাপ পাপড়ির সৌরভ ছড়ানো, হাসনা হেনার সুগন্ধি বিলোনো নিষ্পাপ নিষ্কলুষ ছোট্ট সোনা-মনিদের নির্যাতিত প্রতিচ্ছবি যেন সমাজে দেখা না যায়। কুরআন-হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী সমাজের নারী ও শিশুদের প্রতি যতœবান হই। এ নারী ও শিশুরাই যেন হয়ে ওঠে সুন্দর, স্বপ্নীল ও ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের দক্ষ কারিগর। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমিন।