পথশিশুদের ভবিষ্যৎ কী?
মুহাম্মদ নাজমুল ইসলাম
শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তারাই। শিক্ষা-দীক্ষা, উন্নত ও মানবকি বাংলাদেশের উত্তরসূরি তারাই। কিন্তু কোমলমতি শিশুদের কি আমরা গড়ে তুলতে পারছি? নিশ্চিত করতে পারছি কি তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো? পারছি না। হয়তো সব শিশুর ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু অনেক শিশুই আছে যারা পথে ঘাটে জীবন কাটায়। অবহেলা পড়ে থাকে ফুটপাতে। তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয় না। রাস্তাঘাট, পার্কে শিশুদের ভিক্ষা করতে দেখা যায়। রাজধানীর অলিতে গলিতে, মাছ কিংবা সবজি বাজারে একমুঠো ভাত খাওয়ার জন্য কোমলমতি শিশুরা অন্যের কাছে হাত পাতছে। গভীর রাতে রাজধানীর ভিআইপি এলাকাগুলোতে গভীর রাতে ফুল বিক্রি করতে দেখা যায় শিশুদের। রাজধানীর বিভিন্ন পার্ক, উদ্যান কিংবা ব্যস্ত রাস্তার পাশের ফুটপাতে খেয়াল করলে দেখা যায়, শতশত পা ভাঙা, হাতা ভাঙা এমনকি বীভৎস চেহারাযুক্ত ক্ষত নিয়ে শুয়ে ভিক্ষা করছেন অনেকে শিশু, যুবক এবং বৃদ্ধদের। আমাদের হয়তো জানাই নেই একটা পথশিশুর জীবনযাপন কতটা দুর্বিষহ। প্রায়শই রাস্তা, পার্ক, ট্রেন ও বাস স্টেশনে, লঞ্চঘাটে, বিমানবন্দরে কিংবা সরকারি ভবনের নিচে ঘুমায় ওরা। প্রতিনিয়তই নাইট গার্ড কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাদের।
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে ১৯নং ধারায় সুস্পষ্ট বলা আছে, কোনো শিশুকে যেকোনো ধরনের অনাচারের কবল থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব একমাত্র রাষ্ট্রের। শিশুদের সার্বিক নিরাপত্তা ও বেঁচে থাকার অধিকার জন্মগত, সে হিসেবে একটা শিশুকে জেনে-শুনে রাস্তায় জীবনযাপন করিয়ে মাদক, ছিনতাই এবং ড্রাগসে ঠেলে দিচ্ছি আমরাই। আফসোসের বিষয় হচ্ছে, পথশিশুদের জন্য জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক সংগঠন যে আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সরকারের এ বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া খুবই জরুরি। শুধু জরুরিই নয়, কর্তব্যও বটে।
লেখক: শিক্ষার্থী, দেওবন্দ ভারত
সম্পাদনা: আশিক রহমান