মেগা প্রকল্পগুলোর তদারকির কোনো ব্যবস্থাই নেই
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ
জনগণের অর্থ সম্পদ কোথায় জমা হচ্ছে বা কোথায় পাচার হচ্ছে এ সম্পর্কে স্বচ্ছ কোনো হিসাব-নিকাশ নেই। ব্যাংক থেকে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে এবং বছরে লক্ষ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে যাচ্ছে। যে পরিমাণ বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প আগামী বছরের জন্য আসছে তার কাছাকাছি পরিমাণ অর্থ তো প্রতিবছর পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই পাচার হওয়া টাকার মাশুল দেওয়ার জন্য জনগণের উপরে ভ্যাটসহ নানা ধরনের বোঝা চাপানো হচ্ছে। ভ্যাটসহ সব জিনিসপত্রের উপরে নানা রকম ফি বসানোর যে অস্থিরতা তার কারণ হচ্ছেÑ কিছু গোষ্ঠী যে টাকা পাচার করছে এর ফলে অর্থনীতিতে যে ঘাটতি পড়েছে, সেই ঘাটতি পূরণের জন্য এখন জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে তার পকেট থেকে দিতে হচ্ছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়।
সব মেগা প্রকল্প হচ্ছে একেকটা মেগা দুর্নীতির ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। সারা পৃথিবীতে এত ব্যয়বহুল প্রকল্প কোথাও হয়নি। সড়ক বানানো, সেতু বানানো সব ক্ষেত্রেই এত ব্যয়বহুল প্রকল্প কোথাও দেখা যায়নি। এত ব্যয়বহুল হওয়ার কারণ হলোÑ এর মধ্যে কমিশনের হার বেশি, এর মধ্যে দুর্নীতির হার বেশি। যার ফলে প্রতি কিলোমিটার সেতু বা সড়কে, প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুতে এত বেশি বাজেট যা পৃথিবীর কোথাও এ রকম দৃষ্টান্ত নেই। এগুলোর ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বিবিধ খরচ বেশি দেখা যাচ্ছে। বেশি ব্যয়বহুল প্রকল্পের জন্য দুর্নীতিও অধিক হারে দেখা যাচ্ছে। সুতরাং এটা তো প্রকৃত উন্নয়নের পক্ষে না। এটাই হচ্ছে প্রধান উদ্বেগের বিষয়। কারণ এই সম্পূর্ণ বোঝাটাই তো জনগণের উপরে চলে আসছে। যে বিষয়গুলোতে গুরুত্বআরোপ করা দরকার তা হলোÑ সকল টাকার মালিকদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা। যারা কোটি কোটি টাকা পাচার করছে তাদের শনাক্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। মেগা প্রকল্পগুলোর তদারকির কোনো ব্যবস্থাই নেই। এই বিষয়গুলোতে তদারকি করা দরকার।
পরিচিতি: অর্থনীতিবিদ
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি/সম্পাদনা: আশিক রহমান