দুর্যোগেও রোজ পাহাড়চুড়োয় বৃদ্ধ
ডেস্ক রিপোর্ট : রোজ ভোর চারটেয় ঘুম থেকে ওঠা। আর তারপরে ২৬৩৫ ফিট লম্বা পাহাড় ‘কনিস্টন’ পাহাড়ের চুড়োয় উঠা। তারপরে ফের নীচে নেমে এসে প্রাতরাশের টেবিলে বসা। এমনটাই রোজনামচা ৬৭ বছরের বৃদ্ধ সিয়ন জেয়ারের! এটুকু পড়ে মনে হতেই পারে বৃদ্ধ বয়সেও রীতি মতো সবল শরীর এবং মনের জোর ধরে রাখতে পেরেছেন বলেই হয়তো এমন তাক লাগানো কাজ করতে পারছেন জেয়ার। সত্যিটা কিন্তু আসলে ঠিক উল্টো। অসুস্থ বলেই রোজ পাহাড়ে ওঠেন জেয়ার। আজকাল
ইংল্যান্ডের লেক কাউন্টির এই বৃদ্ধ এক সময় বনবিভাগে কাজ করতেন। কনিস্টন পাহাড় এবং পাহাড় সংলগ্ন জঙ্গলই ছিল তার কর্মস্থল। সেখানে অভিযাত্রীদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, চোরাশিকার চলছে কিনা, সে সবের উপরে নজরদারি করাই ছিল তার কাজ। সুস্থ শরীরে অবসর নিয়েছিলেন জেয়ার। তারপরে আক্রান্ত হন দুরারোগ্য অ্যালঝাইমার্স রোগে। এই রোগে বেশ কিছু মানসিক বিকার দেখা যায়। জেয়ারও তার থেকে রেহাই পাননি। অসুস্থ হওয়ার পরে জেয়ারের বারবার মনে হতে থাকে, কোনও অভিযাত্রী হয়তো আটকে পড়েছেন পাহাড়ের চুড়োয়। বিকার এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে রোজ পাহাড়ের চুড়োয় উঠে তল্লাশি করেন জেয়ার। এবং বিগত সাত বছরে একদিনও ছেদ পড়েনি জেয়ারের নতুন কাজে। ঝড়-বৃষ্টি খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোনও কিছুতেই জেয়ারকে আটকে রাখতে পারেন না তার পরিবারের সদস্যরা। জেয়ারের মানসিক বিকারে অবশ্য একেবারে যে কাজ হয়নি তাও বলা চলে না। চার বছর আগে খারাপ আবহাওয়ার কারণে পাহাড়ে আটকে পড়েছিলেন লিভারপুলের চার তরুণ। জেয়ার গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। তারা জেয়ারকে ধন্যবাদ জানান এখনও। বলেন, ‘ভাগ্যিস জেয়ারের মানসিক বিকার ঘটেছিল। না হলে আমরা হয়তো আজ বেঁচেই থাকতাম না।’ জেয়ারের রোগের চিকিৎসা চলছে এখনও। রোজ পাহাড়ে ওঠা যে একটা মানসিক বিকার, সেটা মেনে নিচ্ছেন তার চিকিৎসকও। তবে যতদিন শারীরিক সক্ষমতায় পারছেন, ততদিন পাহাড়ে উঠা বন্ধ না করারই উপদেশ দিয়েছেন তিনি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ