বিএনপির ভিশন-২০৩০, মিশন ২০১৯!
কাজী সিরাজ
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দলের যে কার্যক্রম আমরা দেখছি এটা একটা ভাল দিক। ইতিবাচক। আওয়ামী লীগ তাদের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল সেখান থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতিতে নেমে গেছে। সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের আরও দেড় বছরেরও বেশি সময় সামনে আছে। আওয়ামী লীগ দুই বছর আগেই নির্বাচনের কাজে নেমে পড়েছে। এটা অস্বাভাবিক একটা ঘটনা। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের এই প্রস্তুতি দেখে মনে হচ্ছে, তারা চায় আগামী জাতীয় নির্বাচনটা ভাল হোক। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উনি আর বিতর্কিত নির্বাচন চান না। তার ফলে মানুষের মধ্যে একটা ধারণার জন্ম নিয়েছে যে, উনারা এত আগে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার অর্থই হচ্ছে সিডিউল টাইমের আগেও নির্বাচনটা হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারির ৯০ দিন আগে যে নির্বাচন হওয়ার কথা সংবিধান অনুযায়ী, তারও আগে হয়ে যেতে পারে আগামী নির্বাচন। অর্থাৎ আগাম একটা নির্বাচন আমরা আগামীতে দেখতে পারি, এ রকম একটা ধারণা প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি থেকে পাওয়া যায়। অন্যদিকে বিএনপির একটা দাবি ছিল, তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে না, এ রকম কথাবার্তা তারা বলেছে। তবে তাদের মধ্যেও একটা পরিবর্তন আসছে বলে মনে হচ্ছে। তারাও আর এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাচ্ছে না, বলছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার তারা চায়। নির্বাচন যে তারা অংশগ্রহণ করতে চায় এ রকম একটা শুভ লক্ষণ তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই সার্চ কমিটি যে সংবিধানে নেই এটা বিএনপি জানে। এর আগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সাহেবও যখন সার্চ কমিটি গঠনের জন্য সব রাজনৈতিক দলকে ডেকেছিলেন, বিএনপি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিল। তবে এই সার্চ কমিটি সংবিধান অন্তর্ভুক্ত নয় বলে তখন কোনো নাম দেয়নি। কিন্তু সার্চ কমিটি নিয়ে এবার আপত্তি জানালেও একেবারে বয়কট করেনি। এবার তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে জড়িত হয়ে গেছে। ২০ এপ্রিল ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেন বেগম খালেদা জিয়া। এটা তো উনাদের জাতীয় সম্মেলনের বর্ধিত রূপ। এটা দিয়ে তিনি কনফার্ম করলেন, ভিশন-২০৩০ কিন্তু মিশন ২০১৯। অর্থাৎ ২০১৯ সালের নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেছেন। ২০৩০ সালে আমরা এই করব, ওই করবÑ তার মানে হচ্ছে ভোটারদের আকৃষ্ট করা। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২০৩০ সালে বাংলাদেশের চেহারা কি হবে তার ছবি জনগণের কাছে তুলে ধরেছে। এটা শুভ লক্ষণ। দুই দলেরই নির্বাচনের পক্ষে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ। জনগণও তাদের পদক্ষেপসমূহ ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে বলে আমার কাছে মনে হয়।
পরিচিতি: সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আশিক রহমান