সাধারণ মানুষের বাজেট ভাবনা
বাজেটে এসব সমস্যার সমাধান থাকা একান্ত প্রয়োজন। আসলে গার্হস্থ্য বাজেট ভাবনায় পরিষেবার জন্য কর বা ভ্যাটের জন্য ততটা নয় কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব থাকেন সকলে। গত আট বছরে আওয়ামী সরকারের আমলে বাজার মোটামুটি স্বাভাবিক থাকলেও বিদ্যুতের দাম একাধিকবার বৃদ্ধি করায় তার প্রভাবে ভোগ্যপণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখি ছিল। এজন্য বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকাটা জরুরি। তাছাড়া শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকার যুব সমাজের চাকরি হওয়ার ব্যাপারে বাজেটে নির্দিষ্ট কোনো নীতির ঘোষণা থাকলে স্বপ্নময় হয়ে উঠবে আজকের প্রজন্ম। বাজেট মানেই কিছু পণ্যের উপর বাড়তি কর বৃদ্ধি। আর কিছু পণ্যে কর ছাড়। গার্হস্থ্য জীবনে অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক জিনিসের কদর বেড়েছে। এজন্য অনেকেই প্রত্যাশা করেন দাম কমুক ল্যাপটপ, স্মার্টফোনের। এ কথা ঠিক সাধারণ মানুষ জিডিপির পরিমাণই জানেন নাÑ তার শতকরা তো দূরের কথা। প্রতিবছর বাজেটের ঘাটতি পূরণের নানা পরিকল্পনা ঘোষিত হয়। আর শেষ পর্যন্ত দেখা যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের বর্ধিত বোঝার ভার জনগণকেই বইতে হচ্ছে। পূর্ববর্তী বছরের বাজেটে করারোপের সীমারেখা বাড়ানো হয়েছিল। ফলে দু-চারটা জিনিস ছাড়া আজকাল প্রায় সবকিছুতেই ভ্যাট দিতে হয়, আর তা গরিব-ধনী সবার ব্যাপারেই সমানভাবে প্রযোজ্য। সাধারণ মানুষ হয়তো মনে করে, জিনিসের দাম এমনিতেই বেড়েছে কিন্তু তা যে প্রতিটি ক্ষেত্রে ভ্যাট যোগ করার জন্য তাও সবাই জানেন না। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, অতি দরিদ্র মানুষও করের আওতামুক্ত নয়। মানুষকে আয়ে যেমন কর দিতে হয়, প্রায় প্রতিটি ব্যয়েও ভ্যাট দিতে হয়। অন্যদিকে বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে লম্বা লিস্ট প্রকাশ করা হয় কী কী জিনিসের দাম কমবে ও বাড়বে। কিন্তু মূল্য কমলে সেই পণ্যের দাম ভোক্তার ক্ষেত্রে খুব একটা প্রযোজ্য হতে দেখা যায় না। আবার সরকারের কোনো সংস্থা এসব কখনো নিশ্চিত করে জনগণকে ফায়দা পাইয়ে দিয়েছেÑ এমন কথা কেউ খনো শুনেছেন বলেও মনে হয় না। এসবই সাধারণ ভোক্তার অভিজ্ঞতা এবং সব সরকারের আমলেই এই একই অভিজ্ঞতা পরিলক্ষিত হয় কিন্তু কেউ কখনো এর প্রতিকার করেন না।(চলবে-০২)
লেখক: অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা: আশিক রহমান