চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কে কার আগে?
এস আর আলিফ
আজ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সেরা আটটি ক্রিকেট দলের অংশগ্রহণে, চ্যাম্পিয়নসদের প্রতিযোগিতা, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। বছর চারেক পর পর এই আয়োজন হয়। যদিও এ বছরই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শেষ আসর। বিশ্বকাপের পরই এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মর্যাদার আসন। এর আগের আসরগুলোর চেয়ে ২০১৭ সালের এই আসরটিকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ, উত্তেজনা অনেক বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গণমাধ্যম মানুষের সেই আগ্রহ, আলোচনাকে তুলে ধরছে।
অন্যবারের আসরগুলোর চেয়ে এই আসরটি নিয়ে আমাদের আগ্রহ সম্ভবত অনেক বেশি। সঙ্গত কারণও রয়েছে। দীর্ঘ ১১ বছর পর আমরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলছি নিজ যোগ্যতায়। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হটিয়ে আমরা এই টুর্নামেন্টটিতে অংশগ্রহণ করছি। শুধু কি তাই, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা র্যাংকিংয়ে থেকেই মূল আসরে খেলতে নামছি আজই। আমাদের র্যাংকিং এখন ছয়। পেছনে সাবেক তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ছয়ে কত নম্বর নিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষ করতে পারব, এই আলোচনা এখন মুখর। যার শুরু হবে আজই। ৮টি দল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশকে ছাড়া বাদবাকি সবাই কোনো না কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শক্তিমত্তার বিচারে এবারের টুর্নামেন্টটি অত্যন্ত জমজমাট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এবারের আসরের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট ধরা হচ্ছেÑ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে। বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানকে হিসেবে আনা হচ্ছে না। বাস্তবতা ঠিক এমনটি না হলেও ফেবারিট তকমা ভারত পেতেই পারে। মূল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে যে পারফরমেন্স তারা দেখিয়েছে তা ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের মতোই। ইংল্যান্ড দলেও এমন কিছু খেলোয়াড় রয়েছে যারা সত্যিই দুর্ধর্ষ। তাদের দিনে ইংল্যান্ডকে হারানো কঠিনই বটে। অস্ট্রেলিয়া দলটিতে তরুণ বেশি। অধিনায়ক স্মিথ ও ওয়ার্নার দলটির প্রাণ। রয়েছে বেশ কয়েকজন ফাস্ট বোলার, যারা যেকোনো দলের জন্য ত্রাস হতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সবসময়ই ভালো টিম, তাদের দলেও ভালো ভালো খেলোয়াড় থাকে, কিন্তু ফাইনালি তারা ব্যর্থ হয়। কেন হয় এই নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়। কিন্তু কাজের কিছুই হয় না। এবিডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলা ও ডি ককের মতো খেলোয়াড় রয়েছে তারা তো ফেবারিট তকমা পেতেই পারেন।
পাকিস্তান দলটিও এখন তরুণ। তবে শোয়েব মালিকের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে দলটিতে, যা তাদের ভালো করতে ভূমিকা রাখতে পারে। নিউজিল্যান্ড ২০১৫ সালের ফাইনালিস্ট। ব্রেন্ডন ম্যাকলাম না থাকলেও মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসের মতো খেলোয়াড় দলটিতে রয়েছে। চ্যাম্পিয়নস তারাও হতে পারে। বাংলাদেশ তো এ আসরের সবচেয়ে বড় চমক। বিশ্লেষকরা তাই বলছেন। বাংলাদেশ তার ইতিহাসের সেরা দল নিয়ে এই টুর্নামেন্টটিতে অংশগ্রহণ করছে। মুস্তাফিজ, সাকিব, তামিম, সৌম্য, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেনের মতো খেলোয়াড় দলটিতে রয়েছে। গত দুই-আড়াই বছরের পারফরমেন্স দলটিকে স্বপ্নবাজ করে তুলেছে। সম্ভাব্য সেমি ফাইনালিস্ট হিসেবে দলটিকে কেউ হিসেবে না আনলেও সব হিসেব মাঠের পারফরমেন্সে পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। শ্রীলংকা একটা পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে তাদের পারফরমেন্স খুব ভালো না হলেও তারাও যেকোনো কিছু করে দেখিয়ে দিতে পারে। মালিঙ্গার মতো খেলোয়াড় দলটিকে সাহস যোগাবে কোনো সন্দেহ নেই।
টুর্নামেন্টে কে কার আগে, কে সেমিফাইনাল বা ফাইনাল খেলবে তা আগে থেকে নিশ্চিত করে কিছু বলা না গেলেও সামনে একটা জমজমাট টুর্নামেন্ট অপেক্ষা করছে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। জয়তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, জয়তু বাংলা টাইগার।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী/সম্পাদনা: আশিক রহমান