আত্মসমর্পণের চেয়ে আত্মহত্যাই কি শ্রেয়!
মিঠুন মিয়া
আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও আত্মহত্যার পথই বেচে নিচ্ছে জঙ্গিরা। সর্বশেষ রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের পাঁচজন নিহত হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জঙ্গিদের মধ্যে পরিবারের সদস্য নিয়ে আত্মঘাতী হবার প্রবণতা লক্ষণীয়। এমনকি বাদ যাচ্ছে না শিশুও। তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, আত্মঘাতী হামলাকারীরা যদি আস্তানা থেকে বের হয়ে আত্মঘাতী হামলা করতে পারে তাহলে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের পথ খোলা থাকলে জঙ্গিদের অনেকেই আত্মসমর্পণের চেয়ে আত্মহননকে শ্রেয় মনে করছে। এতেই স্পষ্ট জীবনের প্রতি জঙ্গিদের কোনো মমতাবোধ নেই। এ এক ভয়াবহ প্রবণতা। যা দেশ ও সমাজের মারাত্মকভাবে ক্ষতিকর। অর্থাৎ জঙ্গিরা হাইলি মোটিভেটেড। তাদের মস্তিষ্ক এমনভাবে ধোলাই করা হচ্ছে, যাতে তারা ভাবছে কাউকে হত্যা করতে না পারলেও নিজে আত্মহত্যা করলেই বেহেশতে যাওয়া যাবে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গিরা উদ্বুদ্ধ। তাদের মনেপ্রাণে ধর্মীয় বিশ্বাস এমনভাবে জাগ্রত করা হচ্ছে, যাতে তারা জীবনের মায়া করছে না।
আত্মঘাতী হলেই তারা বেহেশতে যেতে পারবে। এছাড়াও পুলিশের হাতে ধরা পড়লে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে তথ্য বের হয়ে যেতে পারে। সে ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্যও কেউ-কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। আক্রমণের কোনো একটি পর্যায়ে যদি তারা নিহত হয়, এটা যদি আত্মহত্যাও হয়, তাহলেও তাদের জান্নাতটা নিশ্চিত। মূলত এ বিশ্বাসের কারণেই তারা নিজেদের পরিবারের নারী এবং শিশুসহ নিহত হতে দ্বিধাবোধ করছে না। কিন্তু জঙ্গিদের মন থেকে এই অপবিশ্বাস দূর করার উপায় কী?
লেখক: প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়/সম্পাদনা: আশিক রহমান