নারদ নদের প্রাণ ফেরাতে নাটোর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগ
জালাল উদ্দিন, নাটোর : নাটোরের একটি প্রাচীনতম নদ নারদ। নারদ নদকে ঘিরে প্রায় ৩০০ বছর আগে নাটোর শহরের গোড়াপত্তন ঘটে। ১৭০৬ সালে নারদকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে নাটোর রাজ সভ্যতা। নাটোর শহরের মধ্যভাগ দিয়ে প্রবাহিত এই নদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ কিলোমিটার এবং নাটোর শহরের মধ্যে যার অবস্থান ৬ কিলোমিটার। অতীতে এই নদের বুক চিরে বয়ে চলত বড় বড় জাহাজ, বাণিজ্য তরী আর গহনা নৌকা। এই নদকে ঘিরে লোকজীবনে চলত নানান লোকজ উৎসব, মেলা আর নৌকা বাইচ। পূজা-পার্বনে নদের দুই তীরে বসত মিলনমেলা।
কিন্তু কালের বিবর্তনে মরে গেছে এ নদ। নদের পাড়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় তার বর্জ্যে নদ ভরাট হওয়া ছাড়াও পরিবেশ দূষণ ঘটছে প্রতিনিয়ত। দখলবাজদের কবলে পড়ে এর পাড়ে গড়ে উঠেছে বসতবাড়িসহ নানা স্থায়ী স্থাপনা। নিজের ইচ্ছামতো স্থাপনা নির্মাণ করে অনেক দখলদাররা সহজেই বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। ক্রমাগত অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য নারদ নদে ফেলায় নদের পানি নাটোরবাসীর কাছে আজ এক দু.খের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত এই নদ ভরাট হয়ে যাওয়ায় নারদ নদ খনন ও পরিষ্কারকরণ এখন সময়োপযোগী এক প্রাণের দাবি। নাটোরের নারদ ও বড়াল নদসহ সকল নদীতে অবৈধ দখল এবং স্থাপনা উচ্ছেপূর্বক নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ এবং জলজ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা জনস্বার্থে অতীব প্রয়োজন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন নাটোরসহ ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ এবং মন্ত্রণালয় অত্যন্ত আন্তরিক ভূমিকা পালন করতে বদ্ধ পরিকর।
বিগত ৩১-০১-২০১৭ তারিখ জেলা প্রশাসকের ফেসবুক পেইজে নারদ নদ সম্পর্কিত একটি স্ট্যাটাস প্রকাশিত হয়েছিল। উক্ত স্ট্যাটাসে নারদ নদকে পুনর“জ্জীবিত করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, নাটোর আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং সর্বস্তরের জনগণ সেই মতামতকে সমর্থন করে অবিলম্বে নারদ নদকে দখল মুক্ত করে নারদকে স্বরূপে ফেরত আনার আহবান জানান।
সেই পরিক্রমায় জেলা প্রশাসন নাটোর ইতোমধ্যে নারদ নদের দখলদারিত্ব নিয়ে বিস্তর তদন্ত, আলোচনা, মতামত এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রাক-কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে । জেলা প্রশাসক সরেজমিনে উপস্থিত থেকে নারদ নদের সার্ভে করেছেন। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান