২০১৯ নির্বাচনে জনতার নেতারা কি গ্রিনসিগন্যাল পাবেন?
রবিউল আলম
কোনো একটি সুনির্দিষ্ট আদর্শ নিয়ে মানুষ রাজনীতি করতে আসেন। রাজনীতির মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে জাগিয়ে তুলে দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের মাধ্যমে জাতি গঠনের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেন। ঐক্যের নাম রাজনীতি। নিজের পরিচিতি, দলের আদর্শ জনগণের কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে আমরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি। বহির্বিশ্বের আক্রমণ ও দেশীয় ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পেতে ঐক্যের প্রয়োজন হয়। মতপ্রকাশের অধিকার সবার আছে, তবে দলীয় দায়িত্ব নিয়ে এমপি, কাউন্সিলর হয়ে কর্মীদের অধিকার হরণের অধিকার দল কাউকে দেয়নি। ২০১৯ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় ঐক্যের প্রয়োজন। জাতীয় ঐক্য হবার নয়, একটি মূর্তি সরানো নিয়ে আজ মতপার্থক্য, পবিত্র কাবা ঘরে মূর্তি ছিল ভাস্কর্য কুরআনে স্বীকৃত; তবু রাজনৈতিক বিজয় অর্জন হয়েছে, ধর্মের নামে যারা রাজনীতি করে। আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মতে, সংস্কৃতির পরাজয় হয়েছে। বিএনপি, আওয়ামী লীগ অভিন্ন ভাষায় কথা বলেছে এ বিষয়ে। প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, ভাস্কর্য সরাতে অথবা অন্য কোথাও প্রতিস্থাপনে। সে যাই হোক মাঝে মাঝে জাতীয় ঐকমত্যের দাবি করেন অনেকেই, সংস্কৃতিকর্মী, বাম রাজনীতিবিদদের মতামত কোথায়। মূর্তি নিয়ে রাজনীতি আর কত? আদর্শ, মূলনীতি নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। মনে অনেক গভীর ক্ষত নিয়ে চলতে হবে বিজয়ের আশায়। বিজয় আমাকে অন্য কোনো আদর্শ এনে দিতে পারবে না, এনে দিবেও না। আমি আমার দল যদি ঐক্যবদ্ধ করতে না পারি, ক্ষমতায় আছি বলে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আমাকে রাজনৈতিক দেউলিয়া করতে পারে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে দলকে, দলের এমপি, চেয়ারম্যান, কাউন্সিলারদের অহংকারী করে তুলেছে। ওয়ার্ড, থানা, জেলার নেতাদের সঙ্গে ঐক্য কোথায়, দলীয় প্রধানের আদেশ অমান্য হচ্ছে, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ হতে পারে।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আশায় এমপি কাউন্সিলরগণ বসে আছেন। কিন্তু সেই নির্বাচন যে কত কঠিন হবে তা অনুমান করতেও চান না জনপ্রতিনিধিরা। কে কোথায় থাকে সভাপতি হয়েও জানি না, জনগণ তো অনেক দূরের কথা। ওয়ার্ড কাউন্সিলররা ফুটপাত নিয়ে টানাটানি করছেন, দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন না, মহানগর অফিস না থাকায় পর্যবেক্ষণ ও দায়বদ্ধতায় আনা যাচ্ছেন না। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের উপর আওয়ামী লীগের রাজনীতি চলছে না। তাদের দাবি জনপ্রতিনিধি দলের থাকে না, রাষ্ট্রপতি যেমন দলীয় কর্মসূচিতে আসেন না, দেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত, এমপি ও কাউন্সিলরাও তাই। আমার বিদ্যার জোর কম হওয়ায় বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। যদি তাই হয় তবে দলীয় নমিনেশনের প্রয়োজন কেন, কর্মীদের দেখার দায়িত্ব নেওয়া হয় কেন?
মতাদর্শ ও মতপার্থক্য থাকবেই, কারও উপর আশা করে রাজনীতি হয় না, নিজ থেকে গুছিয়ে নিতে হবে। তাই জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতাদের গ্রিন সিগন্যাল দিতেই হবে। মানুষের মন জয় করতে না পারলে ভোট আদায় করা যাবে না। কর্মীদের মন জয় না করে ভোট রক্ষা করা যাবে না।
লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা: আশিক রহমান