নারীরা এগোচ্ছে, নারীরা এগোবোই
ড. সামিনা লুৎফা
নারীদের আসলে অনেক বাধা পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রে আসতে হয়। কর্মক্ষেত্রে আসার পরও নতুন নতুন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন কর্মক্ষেত্রে নানা নিপীড়ন, সহিংসতা তো আছেই। এমনকি রাস্তাঘাটে এবং ঘরেও এই সহিংসতা বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবস্থা বা সংগঠনগুলোর আলাদা কোনো উদ্বেগ নেই। আমরা দেখেছি যে পাশ্চত্যে কর্মজীবী নারীদের সন্তানদের রেখে যাওয়ার একটা উন্নত ব্যবস্থা আছে। যেমন ডে কেয়ার সেন্টার। সেই তুলনায় কোনোটাই নেই আমাদের দেশে। তার ফলে নারীদের ক্যারিয়ারটা ছোট হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ তার লক্ষ্য ছোট হয়ে আসছে। বড় লক্ষ্যে যেতে হলে তাকে আরও বেশি সময় দিতে হয়। তখন তিনি সময়টা দিতে পারবে না কারণ তার পিছুটান আছে। দেখ যায় মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে ঘরের পুরুষ সদস্যরা তাদের গৃহস্থলির কাজের দায়িত্ব নিচ্ছেন না। যদি এই সমস্ত কাজের দায়িত্বটা নিতেন তাহলে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হতো। একদিকে নারীদের একইসঙ্গে যেমন ঘরের কাজ করতে হচ্ছে, তেমনি বাইরের কাজও করতে হচ্ছে। নারীরা এক্ষেত্রে বারডেনের শিকার হবেন। যেমন সন্তানের লেখাপড়ার, দেখাশুনার দায়িত্ব নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে তিনি সময় দারিদ্র্যেতার শিকার হচ্ছেন।
সবকিছুর পরও সামাজিক রীতিনীতি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেই নারীদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যদি যথাযথ উদ্যোগ না নেয় তাহলে বিনিয়োগটা পুরোপুরি বেকার হয়ে যাচ্ছে। পুরোপুরি অর্জনটা আসছে না। কারণ নারীরা তাদের কর্মজীবন পুরোপুরি চালিয়ে যেতে পারছেন না। সেটা নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সমস্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য এই ব্যবস্থা করতে হবে। নারীরা অনেক বাধা বিঘœ পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের বেতন কম, সহিংসতার শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। তারপরও তারা যথেষ্ট অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন দেশের কল্যাণে। এই সম্ভাবনাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুরুষ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সর্বোপরি মাকে তার কন্যা বা পুত্র উভয় সন্তানকে শেখানো যে ঘরের কাজ নিজেকেও করতে হয়। অর্থাৎ সব কাজ নারীকে একা করতে হবে এটা ঠিক নয়।
পরিচিতি: সহযোগী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মতামত গ্রহণ: ফাতেমা-তুজ-জোহরা/সম্পাদনা: আশিক রহমান