নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি
ইসমাঈল হুসাইন ইমু : জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি পর্যালোচনা করছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি নিষিদ্ধ হওয়া জামআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) একটি অংশ ২০১৩ সাল থেকে ‘নব্য জেএমবি’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম দিকে সংগঠনটি মধ্যপ্রাচ্যের ইরাক ও সিরিয়ায় জিহাদি পাঠানো শুরু করে। ২০১৪ সালের ২৯ জুন ইরাক-সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) খেলাফত ঘোষণার পর নব্য জেএমবি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বিদেশি নাগরিক, ভিন্নমতাবলম্বী ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের টার্গেট করে হত্যা শুরু করে। গত বছরের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি ২০ নাগরিক ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার পর নতুন করে আলোচনায় আসে সংগঠনটি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নব্য জেএমবি নিষিদ্ধ হলে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ হওয়া সংগঠনের সংখ্যা বেড়ে ৮ হবে। সর্বশেষ গত ৫ মার্চ আনসার আল ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরিরকে নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া ২০০৫ সালের বিভিন্ন সময়ে জামআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি-বি), শাহাদৎ-ই-আল হিকমা ও জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) নামের সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়।
জানা যায়, হলি আর্টিজানে হামলার পর নব্য জেএমবির বিভিন্ন আস্তানায় ধারাবাহিক অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ৯ মাসে নব্য জেএমবির অন্তত ১১টি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। এসব আস্তানায় নব্য জেএমবির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ও সামরিক কমান্ডার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ ৩৭ জঙ্গি নিহত হয়। এছাড়া আস্তানায় অভিযানের সময় সীতাকুন্ড ও মৌলভীবাজারে জঙ্গিরা আত্মঘাতী হওয়ার সময় মারা যায় ৫ শিশু। সিটিটিসির সঙ্গে ক্রসফায়ারে মারা গেছে নব্য জেএমবির আরেক শীর্ষ নেতা নূরুল ইসলাম ওরফে মারজান ও সাদ্দাম। ঢাকার বাইরে বগুড়া ও অন্যান্য জেলাতেও নব্য জেএমবির একাধিক নেতা নিহত হয়েছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ