তারা মানুষ নয়, হিন্দু-মুসলমান বৌদ্ধ খুঁজে বেড়ায়
শরিফুজ্জামান শরিফ
নেতা আর সক্রিয় কর্মীরাই একটা রাজনৈতিক দলের সম্পদ নয়। তার নীরব সমর্থক ও সামাজিক সমর্থন একটা দলকে টিকে থাকতে, এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। স্বীকার করতে হবে, আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মী ও নেতাদের বাইরে এমন একটা শক্ত সামাজিক ভিত্তি ছিল। যে ভিত্তি তাকে বহু প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সহায়তা করেছে। আওয়ামী লীগের আদর্শিক স্খলনের পরেও এই শক্তিটি নিজের মনের ভেতর কতগুলো জুজু বুড়িকে জায়গা দিেেয় নিজে ভীত হয়েছে, সমাজে ভীতি ছড়িয়েছে। নিজে নিজের সঙ্গে কখনো কখনো লড়াই করেছে, কখনো মনের ভেতর প্রশ্ন বা অপ্রাপ্তি নিয়েও নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছে। এই শক্তিটি বেশিরভাগ সময় ওই খোলসের ভেতর নিজেদের বন্দী রেখেছে।
রাষ্ট্র পরিচালনায় আওয়ামী লীগের অবস্থান ক্রমশ ডানে গেলেও বা আওয়ামী লীগের রাজনীতি হেফাজতি-জামায়াতি আদর্শ আর সীমাহীন লুটপাটের নেশায় উন্মত্তদের দ্বারা ক্রমশ দখল হয়ে গেলেও এরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে, ওই খোলসের বাইরে কেউ বেরিয়ে আসুক বা দাঁড়াক সেটা যেমন চায়নি, আবার আওয়ামী লীগের আত্মসমর্পণের সমালোচনায় এরা বিরক্ত হয়েছে, যারা সেই সমালোচনা করেছে তাদেরকে কাছে বা দূরে গিয়ে ভর্ৎসনা করেছে আর নিজেরা ছাই এর গাদায় মুক্তো খুঁজেছে।
কিন্তু গত কয়েকদিনে দেখছি এদের ভেতরের অনেকের বিশ্বাস আর পছন্দের সেই আস্তর খসে পড়ছে। তারা এতদিন আওয়ামী লীগের সমালোচনাকে পাপ মনে করলেও এখন টের পাচ্ছে তাদের সেই আস্থা আর বিশ্বাসের আওয়ামী লীগের ভেতরটা অনেকটাই দখল হয়ে গেছে। তারা মানুষ নয়, হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ খুঁজে বেড়ায়! তারা মুসলিমের অভিভাবক হতে চায়! সমাজ নিয়ে চিন্তাশীল হিন্দু- আদিবাসী-সাঁওতালকে পারভাটেড ভাবে! গত কয়েকদিনের রাজনীতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনার মধ্যে এই বোধদ্বয়কে আমার কাছে ইতিবাচক মনে হয়।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক/ফেসবুক থেকে