মাথা ঠা-া রেখে এগোতে হবে বাংলাদেশকে
আবু সাইদ খান
জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে উপসাগরীয় অঞ্চল অস্থিতিশীল করার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন এবং লিবিয়া। এ ছাড়াও আল কায়দা ও আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনকে মদদ দেওয়া এবং বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ তোলা হয়েছে দেশটির বিরুদ্ধে। যদিও কাতার আরব দেশগুলোর সম্পর্কচ্ছেদ করার সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায্য’ বলে উল্লেখ করে এ সিদ্ধান্তে দুঃখপ্রকাশ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিরতার সময়ে বাংলাদেশকে চট করে কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা সঠিক হবে না। কেননা সেটি আবার এ অঞ্চলে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। তবে মৌলিক প্রশ্ন হচ্ছে, কাতার যদি জঙ্গিবাদের মদদদাতা হয় তাহলে সৌদি আরব কি? প্রকৃতপক্ষে জঙ্গিবাদের মদদ হচ্ছে সৌদি আরব। কেননা ওহাবি মতবাদের উপর জঙ্গিবাদের প্রচার-প্রচারণা চালায় তারা। এর পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
ইতোমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের সঙ্গে ৬টি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য ধন্যবাদ বা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে মাথাঠা-া রেখে বাংলাদেশকে এগোতে হবে। কোনোভাবেই সম্পর্ক ছিন্নের মতো ঘটনায় যাওয়া যাবে না। যেহেতু আমাদের লাখ লাখ শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কাজ করে, প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায় সেটি আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সব দেশের মতো কাতারের সঙ্গেও আমাদের সুসম্পর্ক রেখে কাজ করতে হবে। পাশাপশি আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উস্কানি না দেওয়া কিংবা পক্ষাবলম্বন না করাটাই যুক্তিযুক্ত হবে। যদিও ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের যুদ্ধে বাংলাদেশ জড়াবে না।
যে অভিযোগের ভিত্তিতে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদিসহ অন্য ৬ দেশ তার ফলে হয়তো কাতার কিছুটা অস্থিরতার মধ্যে পড়বে। কিন্তু এতে কি সৌদি আরবসহ অন্যরা কি লাভবান হবে? হবে না। বরং যেকোনো অস্থিরতায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এতে তাদের অস্ত্র ব্যবসা জমজমাট হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আরব দেশগুলোর মধ্যে যে সমস্ত সমস্যা বা মতপার্থক্য বিদ্যমান তা মিটিয়ে ফেলা এবং পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধটা ধরে রাখা, এটাই হবে যুক্তিসঙ্গত। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সুরাহার ব্যবস্থা করাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত ও যুক্তিসঙ্গত।
পরিচিতি: সিনিয়র সাংবাদিক
মতামত গ্রহণ: ফাতেমা-তুজ-জোহরা
সম্পাদনা: আশিক রহমান