গোপালগঞ্জ লেকের বেহাল দশা
এস এম সাব্বির, গোপালগঞ্জ : স্বাধীনতার ৪০ বছর পর বিনোদন ও মানসিক উৎকর্ষ সাধনের একটি উপযুক্ত স্থান পেলেও তা হারাতে বসেছে গোপালগঞ্জবাসী। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মরা-মধুমতির উপর নির্মিত এই লেকটি স্থানীয়দের অত্যাচারে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রতিরাতে চুরি যাচ্ছে লেকের দামী মালামাল। পৌর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার পেছনে এবং জেলা প্রশাসকের বাসভবনের ঠিক সামনে লেকটির রাস্তা ভেঙে গর্তে পরিণত হয়েছে। সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ হোস্টেলের পেছনের ফুটপাতের রেলিং চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। নির্বাচন অফিসের সামনে লেকপাড়ের লাইট পোস্ট ভেঙ্গে ফেলেছে দুষ্কৃতিকারীরা। লেকে বানা দিয়ে আটকিয়ে ব্যক্তিগতভাবে মাছচাষের চেস্টা করছে স্বার্থান্বেষীরা। লেকের অসংখ্য সিটিং বেঞ্চের টাইলস্ ভেঙে ফেলেছে মাদকসেবীরা। লেকের ফুটপাত ঘেঁঁে মালামাল রেখে স্তুপ করেছে ব্যবসায়ীরা। ড্রেনে সকল প্রকার মল-মূত্র ও আবর্জনা ফেলে লেকটিকে ডাস্টবিন বানাচ্ছে পৌরবাসী।
লেকটির পশ্চিম পাড়ে শেখ কামাল ষ্টেডিয়ামের সামনের রাস্তাটি ঠিকারাদাররা ভারী গাড়ি নিয়ে এবং যত্রতত্র মালামাল রেখে ভেঙে ফেলেছে। যানবাহন চলতে পারছে না ওই সড়কে। সর্বোপরি লেকটির বেশ কিছু স্থানে বানা দিয়ে দখল করে মাছচাষ শুরু হয়েছে। এছাড়া লেকের পাশে পার্কের আদলে বেশ কিছুটা জায়াগা জুড়ে হকাররা কাপড়, খুঁটি দিয়ে তৈরি করেছে বিভিন্ন দোকান, যা লেক পার্কের সৌন্দর্যকে নষ্ট করেছে। প্রতিদিন সকালে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ও রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ এই লেকে হাঁটতে এবং বিকলে বিনোদনে যান। সকলেরই চোখে পড়ে লেকের এসব সমস্যা। শহরের আবাসিক ভবন, হোটেল-রেস্তোরা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতসহ সকল প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য এমনকি মল-মূত্র সরু ড্রেনের মাধ্যমে ওই লেকেই পড়ছে। তা নিয়েও কেউ কোনো প্রতিকারের চেষ্টা করছেন না। আর এর ফলে খুব শীঘ্রই লেকটি আবার মরা-মধুমতিতে পরিনত হবে বলে অবস্থাদৃস্টে মনে হয়। শহরবাসী অত্যাধুনক এ লেকটি পেয়েও হারাবে। স্বাধীনতা’র পর ১৯৭২ সালে এখানকার পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলে পৌর-কর্তৃপক্ষ মধুমতী’র পাড়ে নির্মাণ করেছিল ছোট্ট একটি পার্ক। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা ধীরে ধীরে সংকুচিত ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান