যুক্তরাজ্যে সরকার গঠনে রানির অনুমতি পেলেন থেরেসা মে
আনোয়ারুল করিম : নির্বাচন শেষে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পাচ্ছেন ব্রিটেনের মানুষ। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় উত্তর আয়ারল্যান্ডের দল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি)’র সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন কনজারভেটিভ দলের নেত্রী থেরেসা মে। নির্বাচনের ফলাফল পাওয়ার পর গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাকিংহাম প্যালেসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করার পর একথা জানান তিনি। রানী এলিজাবেথ সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল হিসেবে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান হিসেবে থেরেসা মে’কে সরকার গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।
গতকাল শুক্রবারের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। তবে সরকার গঠনের জন্য যথেষ্ট নয়। ব্রিটেনের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ৩২৬টি আসন। কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ৩১৮, লেবার পার্টি পেয়েছে ২৬১, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) পেয়েছে ৩৫, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি পেয়েছে ১২, ডিউপি পেয়েছে ১০ এবং অন্যরা পেয়েছে ১৩টি আসন। নির্বাচনে ৬৮ শতাংশের বেশি ভোট পরেছে, যা ১৯৯৭ সালের পর থেকে বেশি।
রানীর সঙ্গে সাক্ষাত শেষে থেরেসা জানান, ব্রেক্সিট এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি ডিইউপির সঙ্গে ‘বন্ধু এবং জোট’ হয়ে কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘আসুন সবাই একসঙ্গে কাজ করি।’ এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিটের আলোচনা দশ দিনের মধ্যে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন থেরেসা মে।
‘ঝুলন্ত পার্লামেন্ট’ পাওয়ার পর সরকার গঠন নিয়ে দিনভর চলে দৌড়ঝাঁপ। আসনসংখ্যা বেশি থাকার কারণে থেরেসা মেকেই সরকার গঠনের ব্যাপারে প্রথম সুযোগ দেওয়া হয়। আর এতেই তিনি ডিইউপিকে সঙ্গে নিয়ে জানান দিলেন কনজারভেটিভরাই থাকছে ক্ষমতায়। আসনসংখ্যা কম হলেও লেবার নেতা জেরেমি করবিন প্রস্তুত ছিলেন সরকার গঠনের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করতে।
এদিকে, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের দল ডিউপির নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন তারা থেরেসার সঙ্গে আছেন। দলটির এক এমপি স্কাই নিউজকে জানিয়েছেন, সরকার গঠনের জন্য থেরেসাকে যথাযথ সমর্থন দেবেন তারা। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের দল ডিইউপি। ওই এলাকায় এ দলটিই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে নির্বাচনের আগে থেরেসার ক্ষমতায় থাকা নিয়ে দলটি বেশ সংশয় প্রকাশ করেছিল। দলের নেতা আর্লেনে ফস্টার সতর্ক করে দিয়েছিলেন থেরেসার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকাটা কষ্টকর হয়ে যাবে।
থেরেসা মে হঠাৎ করে সাধারণ নির্বাচন ডাকার আগে সংসদে দলের যত আসন ছিল এই নির্বাচনে আসন সংখ্যা তার চেয়েও কমেছে এবং মিসেস মে-কে তার সিদ্ধান্তের জন্য লজ্জায় পড়তে হয়েছে। এদিকে বিবিসির রাজনৈতিক সম্পাদক বলছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টেরেজা মের অবস্থান হবে খুবই দুর্বল এবং তিনি হয়তো বেশিদিন ক্ষমতায় টিকতেও পারবেন না। সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান অনলাইন