‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দিবস : ২৪ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি
ইলিয়াস কাঞ্চন
বাংলাদেশ সরকার জাতীয়ভাবে ২০ অক্টোবর ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দিবস পালনের ঘোষণা করেছে। অনেক দেরিতে হলেও সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নিয়ে আমরা যে আন্দোলন করেছি তা আজ স্বার্থক হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। সরকারের কাছে নিরাপদ সড়কের জন্য বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেছি, যাতে করে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা যায়। আমাদের উচিত হবে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে অন্যের ওপর দোষ না চাপিয়ে নিজের দায়িত্ববোধ থেকে দুর্ঘটনা রোধের জন্য কাজ করা, তাহলে পরিবহনসহ সব জায়গায় শৃঙ্খলা আসবে। আমরা অনেকগুলো বিষয়ে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। প্রতিটি জেলার ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষিত ড্রাইভার তৈরি করা ছিল আমাদের অন্যতম দাবি। এ কাজটি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নিয়ে আমাদের দাবিগুলো সরকার ধীরে ধীরে মানতে শুরু করেছে বা বাস্তবায়নের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে।
আমাদের মূল দাবি ছিল জাতীয়ভাবে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দিবস পালনের। প্রায় ২৪ বছর পর সরকার তা স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা সরকারকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য তো অবশ্যই আনন্দ। নিরাপদ সড়ক চাইÑ আন্দোলনের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের জন্যও তা অনেক আনন্দের। এটাই বাংলাদেশে প্রথম কোনো একটি সামাজিক সংঘের দাবি সরকারিভাবে গৃহীত হয়েছে।
আমার জন্য ২২ অক্টোবর দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন স্ত্রী জাহানারা। তারপর থেকেই ‘নিরাপদ সড়ক চাই’Ñ নামের আন্দোলনের সূত্রপাত শুরু করি। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ অক্টোবরকে জাতীয় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দিবস ঘোষণার দাবি করা হয়। পাশাপাশি স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন করি। দিবসটি পালন করার উদ্দেশ্য হলো সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মানুষকে সচেতন করা। রাস্তা ফোর লেন তৈরি করে মাঝখানে ডিভাইডার দিয়ে একমুখী গাড়ি চলাচলের দাবিও করেছি। আমাদের আরও দাবি ছিল, আইনকে যুগপোযোগী করে বাস্তবায়ন করা। যদিও আমাদের কিছু দাবির সঙ্গে পরিবহন সেক্টর বা অন্যান্য স্টেক হোল্ডারÑ চালক বা মালিক বাধা প্রদান করে আসছিল। তারপরও সরকারের আন্তরিকতায় আজ এ দিবসটি জাতীয়ভাবে পালন করার ঘোষণা এসেছে।
পরিচিতি: চলচ্চিত্র অভিনেতা ও চেয়ারম্যান ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-আন্দোলন
মতামত গ্রহণ: ফাতেমা-তুজ-জোহরা
সম্পাদনা: আশিক রহমান