কর প্রদানের স্বনির্ধারণী পদ্ধতি কার্যত অচল প্রস্তাবিত বাজেটে
বিশ্বজিৎ দত্ত : ধ্রুপদী অর্থনীতির গডফাদার হিসাবে খ্যাত অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথ তার ওয়েলথ অব ন্যাশন বইয়ে রাষ্ট্রের আয়কর আদায়ে প্রধান দুটি বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য বলেছেন। একটি হলো, কর দেয়ার পদ্ধতির সহজতা ও দ্বিতীয়টি করদাতার বুঝতে হবে তার ট্যাক্সের দায় কতটুকু।দেশের আয়কর আইনের ৮২ নম্বর ধারার ডাবল বিতে করপ্রদানের সহজতার জন্য সার্বজনীন স্ব-নির্ধারণী পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ একজন করদাতা তার নিজের আয় নিজে নিরুপন করে নিজেই করপ্রদান করবেন। কিন্তু এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে এই স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে ১৩ টি উপধারা সংযোজন করে আসলে করের সহজতাকেই খ-ন করা হয়েছে। যদিও এবারের স্বনির্ধারণী আয়কর প্রদানের বিষয়ে একটি উপধারা সংযোজন করা হয়েছে যাতে বলা হয়েছে করদাতা নিজের আয় প্রথমবার ঠিকমতো দিতে না পারলে তিনি তা পরবর্তিতে সংশোধন করতে পারবেন। কিন্তু অন্যান্য ধারায় করপ্রদানের এই বিষকেই বাতিল করে করকর্মকর্তাদের দ্বারা অডিটের বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে করপ্রদানকারীকে করের বিষয়ে নোটিশ প্রদানের বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। যাতে স্ব- নির্ধারণীর বিষয়টিই মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ি প্রতিবছর ১৩ লাখ করদাতা স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কর প্রদান করেন। যাতে মোট আয়কর খাতের প্রায় ৮০ শতাংশ কর আদায় হয়। ২০ শতাংশ কর আদায় হয় সাধারণ পদ্ধতিতে। এ বিষয়ে সাবেক আয়কর সদস্য, আমিনুর রহমান বলেন, স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কর প্রদানের বিষয়টি এত জটিল করা হয়েছে তাতে আমিই বুঝতে পারছি না কিভাবে কর দিতে হবে। কিন্তু করপ্রদানকে উৎসাহিত করার জন্য কর দেয়ার নিয়মকে সহজ করে দেয়াই উচিৎ ছিল রাজস্ব বোর্ডের। প্রথমতো করপ্রদানকে উৎসাহিত করার জন্য স্ব-নির্ধারনি পদ্ধতিতে করদাতাদের করের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। কিন্তু প্রথমেই নানা জটিলতা সৃষ্টি করে এখানে কার্যত স্বনির্ধারণীকে অচল করে দেয়া হয়েছে। কেউ যদি কর প্রদানে অসততা দেখায় তাকেতো যেকোন সময়েই ধরা যাবে। এমনকি ৬ বছর আগের করও আদায় করা যাবে। কিন্তু স্বনির্ধারণীকে প্রথমেই নিরুৎসাহিত করার কোন মানে নেই। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি