বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি জঙ্গিদের! ডিএমপির ৪৯ থানা এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার
বিপ্লব বিশ্বাস : দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটিয়ে জনজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টিসহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য একটি কুচক্রী মহল অপতৎপরতায় লিপ্ত। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে চরমপন্থী, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ ও সংগঠিত সন্ত্রাসী চক্রের অপতৎপরতা ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সন্ত্রাসী চক্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র করায়ত্তের মাধ্যমে একদিকে নিজেদের সামর্থ্য বৃদ্ধি অপরদিকে জনমনে নিরাপত্তার অভাব বোধ সৃষ্টি করতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করতে পারে।
যে কারণে পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত সদস্য যাতে একসঙ্গে ছুটিতে না যান সে বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে নির্দেশনা দিয়েছে। একই সঙ্গে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সংশ্লিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে উপ-কমিশনারের (ডিসি) অনুমতি নিতে বলা হয়েছে। নির্দেশনায় পুলিশ সদস্যদের বাইরের কারও দেয়া খাবার গ্রহণ না করার নিশ্চয়তা বিধানের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এটির অনুলিপি ডিএমপির সকল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), সকল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি), ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারদের পাঠানো হয়েছে। গত কয়েক মাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিএমপি এ নির্দেশনা জারি করে।
পুলিশ কমিশনারের ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সময়ের আবর্তনে জঙ্গিদের বিচ্ছিন্ন গ্রুপগুলো পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে মর্মে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে প্রতীয়মান হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপির বিভিন্ন থানা ও ইউনিটের নিরাপত্তা জোরদারসহ পুলিশ পেট্রোল পার্টির অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদের অনুরোধ করেন কমিশনার।
একই সঙ্গে থানায় উচ্চ রেজ্যুলেশন সম্বলিত সিসিটিভি ক্যামেরা সংযোজন, থানার অস্ত্রাগার ও ওয়্যারলেসের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাত ১২টার পর থানায় কোনো দর্শনার্থী প্রবেশের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে তল্লাশি ও সতর্কতার মাধ্যমে থানায় প্রবেশ করতে দিতে বলা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনাগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে- প্রত্যেক থানায় কমপক্ষে তিনটি সেন্ট্রি পোস্ট স্থাপন এবং রাতে ডাবল সেন্ট্রি ডিউটিতে রাখা। থানায় ও পুলিশ ফাঁড়িতে সেন্ট্রিদের সতর্ক অবস্থান এবং তাদের অস্ত্র ও গুলি নিজ নিজ হেফাজতে রাখা। নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রত্যেক থানায় কমপক্ষে তিনটি সেন্ট্রি পোস্ট নির্মাণ করা এবং রাতে ডাবল সেন্ট্রি ডিউটিতে রাখা। থানায় ও পুলিশ ফাঁড়িতে সেন্ট্রিরা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন এবং তাদের অস্ত্র ও গুলি নিজ নিজ হেফাজতে রাখবেন। থানার গেটে প্রবেশের সময় একজন অফিসার নিরাপদ দূরত্বে থাকবেন এবং আরেকজন অফিসার অনগার্ড (অস্ত্র তাক করে) পজিশনে থাকবেন।
কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি চেকপোস্টে কমপক্ষে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তা থাকবেন যাদের মধ্যে তিনজন অনগার্ড অবস্থায় এবং বাকি দু’জন তল্লাশির কাজ করবেন। বিভাগ অনুসারে প্রতিদিন রাতে পুলিশের একজন ডিসি অথবা অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) অথবা সহকারী কমিশনার (এসি) সারা রাত এলাকার টহল ডিউটি তদারকি করবেন। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু