আব্দুল জব্বার, আপনার পাশে আমরা আছি
রবিউল আলম
এ সমাজের মানুষ জানে রাজনীতি করলে, মন্ত্রী হলে, বড় খেলোয়াড় হলে, অভিনেতা, নায়ক, নায়িকা, কণ্ঠশিল্পী হতে পারলে টাকার অভাব হয় না! আমিও তাই মনে করতাম বড় লেখক হবো, টাকা পাই আর না পাইÑ মানুষের কাছে সম্মান পাব। কিন্তু টাকার প্রয়োজন যে লেখা দিয়ে মিটে না।
বিখ্যাত গায়ক আবদুল জব্বারের যে চিকিৎসা করার অর্থ নেই তা বুঝেছিলাম বেশ কিছুদিন আগে। মেয়র সাঈদ খোকনের কাছে গিয়েছিলেন আবদুল জব্বার বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের জন্য। সাঈদ খোকন উদ্যোগী হয়ে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ১২,০০ স্কয়ারের ট্যাক্স মওকুফ করে দিয়েছেন, যার জন্য ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আবদুল জব্বার ও সাঈদ খোকন এবং এটা লিখেছিলাম আমাদের অর্থনীতির পাতায়।
মনের মাঝে অনেক প্রশ্নÑ জাতির জনকের চিকিৎসা করানোর সুযোগ হয়নি, হলে কি হতো। ১৫ আগস্ট যদি বাঙালি এই সুযোগ পেত তবে কি বঙ্গবন্ধুকে বাঁচানো যেত। বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি আব্দুর রাজ্জাক জাতীয় নেতা হয়েও সাহায্য তুলে চিকিৎসা করাতে হয়েছে, অর্থের অভাবে চিকিৎসা হয়নি হাজারো নেতার, শিল্পী, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীর নাম আর কত লিখব। যারা বেঁচে আছেন তাদের কি হবে? মাঝে মাঝে মনে হয় শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না থাকলে এই অসহায় আবদুল জব্বারদের কি হতো? একই সঙ্গে আরও মনে হয়, আবদুল জব্বাররা অসহায় ছিলেন না, অসহায় হয়েছেন। জাতির জনকের আদর্শ বুকে ধারণ করে তাদের তো বিনা চিকিৎসায় মরতেই হবে। জাতির জনকের অনুসারীরা তার চিকিৎসা করাতে পারেননি। রাজাকার কাদের মোল্লাদের মতো লুট শিখেনি, কাদের মোল্লারা ধর্মের কথা বলেন, মৃত্যুর পর টাকা পয়সা সঙ্গে যাবে না বলেন, নিতেও পারেননি। কিন্তু এ কথা তারা বিশ্বাস করত না, সবাই টাকার পাহাড় রেখে গেছে এবং বিশ্বাস করাতে হয়েছে তাদের ফাঁসির মাধ্যমে।
মুক্তিযোদ্ধাদের টাকার প্রয়োজন হয়নি, কোনোদিন হবেও না। মরার পরে যা দরকার তা টাকা দিয়ে হবে না। পৃথিবীর সব টাকা দিয়ে জাতির জনক হওয়া যাবে না, আবদুল জব্বার, মেয়র হানিফ, আব্দুর রাজ্জাক, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, ওয়াহেদুর রশিদ মুরাদ, কবি আসাদ চৌধুরী হওয়া যাবে না। টাকা দিয়ে মীর কাশেম, কাদের মোল্লা তাদের কলংক মুছতে পারবেন না। টাকা দিয়ে আপন জুয়েলার্সের মালিক আবদুল জব্বার হতে পারবে না, দেশপ্রেমিকরা জনগণের টাকা লুট করতে জানে না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীরা এখনো লুট করছে। লুটেরাদের সহযোগিতা করেছে, দলের কিছু কুলাঙ্গার দায়িত্ব নিয়েছেন, জয় বাংলা সেøাগান দিতে পারে না, এখনো বলে না, তারাও শত শত কোটি টাকা সরকার ও জনগণের কাছ থেকে লুটে নিচ্ছে। টাকার অভাবে আবদুল জব্বারদের চিকিৎসা হবে না, তা কি করে হয়। আবদুল জব্বারের ১৬ কোটি মানুষের কাছে আর্তনাদ ১ টাকা করে চাওয়ার প্রয়োজন হবে মনে হয় না । জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা থাকতে চিকিৎসার অভাব হবে না আবদুল জব্বারের, হায়াতের মালিক মহান রাব্বুল আলামিন।
লেখক: ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
সম্পাদনা: আশিক রহমান