জঙ্গিবাদ দমনে যেসব পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হতে পারে
মে. জে. এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার (অব.)
বাংলাদেশে পুলিশ মোটামুটিভাবে জঙ্গিদের সফলভাবে দমন করে রাখছে। যেখানে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে বা প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করছে সেখানেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করছে বা তারা নিজেরাই আত্মহত্যা করছে বা নিজেরাই নিহত হচ্ছে। এটি চালু রাখতে হলে পুলিশ গোয়েন্দা নেটওয়ার্কটা তারা যতটুকু কার্যকর করেছে এটাকে আরও শক্তিশালী করে সফল এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক হলো সবচেয়ে বড় বিষয়। কারণ গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হলে খবরগুলো যথাসময়ে পেয়ে যায়। তারা পেয়ে যাচ্ছে বিধায় বিভিন্ন জায়গায় একটার পর একটা সফল অভিযান চালাতে সক্ষম হচ্ছে। তারা এই খবরগুলো পাচ্ছে গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। সুতরাং গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী করে এটা অব্যাহত রাখতে হবে।
আরেকটা বিষয় হলো এখন জনসচেতনতা মোটামুটি ভালোই গড়ে উঠছে। জঙ্গিদের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন তাদের ঘৃণা করছে। জঙ্গিদের লাশ মা-বাবা গ্রহণ করছে না। এই ধারাটা অব্যাহত রাখার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এবং সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক যে সংগঠন আছে। বিশেষ করে মিডিয়ার যে ভূমিকাটা এটা আরও জোরদার করা দরকার। জঙ্গিরা যে দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, মানুষের শত্রু, মানবতার শত্রু এবং এদের সঙ্গে মানুষের সংশ্লিষ্ট হওয়ার কথা নয়, এরা যে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, ইসলামকে অবমাননা করছে, মুসলমানদের সারাবিশ্বের কাছে হেয় করছে এই বিষয়টি যদি নানাভাবে মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় তুলে ধরা হয় তাহলে এই জনসচেতনতা আরও বাড়বে। তখন জঙ্গিরা কোথাও কোনো জায়গা পাবে না। এই কাজগুলো জরুরিভাবে করা দরকার। আরেকটা হলোÑ ভারত বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত একটা যোগাযোগ সমন্বয় দরকার। তার কারণ এখন দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিদের এই অস্ত্র এবং টাকা ভারত সীমান্ত দিয়ে আসছে। ভারতে সেটা কিভাবে আসছে হয়তো বা অন্য কোনো দেশ থেকে ভারতে আসছে অথবা ভারতের অভ্যন্তরে কোথাও তৈরি হচ্ছে কিনা গোপনে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সীমান্ত দিয়েই এগুলো পার হচ্ছে। সুতরাং ভারত সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে অস্ত্র এবং অর্থের যে বিষয়গুলো আসছে এটি আরও কঠোরভাবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত সমন্বয়, সীমান্তের নজরদারি আরও শক্তিশালী করা দরকার যদি সেটি করা হয় তাহলে এটি আরও অনেকটা কার্যকর হবে।
পরিচিতি: নিরাপত্তা বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমান