ঈদের পর আরও জমবে নির্বাচনি প্রচারণা মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি
উম্মুল ওয়ারা সুইটি ও শাহানুজ্জমান টিটু : ঈদের পর পরই দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নামছে আরও জোরালোভাবে। আওয়ামী লীগ নামছে সরকার গঠনে হ্যাটট্রিক জয়ের মিশন নিয়ে।
আর বিএনপি বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি আদায় এবং সম্প্রতি প্রকাশিত দলের ‘ভিশন ২০৩০’ এর পক্ষে জনমত সৃষ্টির জন্য শান্তিপূর্ণ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলটি সারাদেশে সরব থাকবে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসভা করতে পারেন এবং সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে জনগণের সামনে যাবে দলটি।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসে দুই দলের পক্ষ থেকেই শীর্ষ নেতারা জেলা পর্যায়ে নির্বাচনি সফর শুরু করবেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুই মাসে কয়েকটি জেলায় সফর ও সমাবেশ করলেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখনো ঢাকার বাইরে সফর শুরু করেননি। তবে তিনি রমজানের প্রথম দিন থেকেই ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে ঈদের পরে মাঠে নামার পরিকল্পনা তৈরি করছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ গত কাউন্সিলের পরই নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলে দল মনোনয়ন দেবে না। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে কাজ শুরু করতে বলেছেন। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশ মতো তারা কাজ শুরু করেছেন। ঈদের পর কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা সফর করবেন। এসব সফরের মধ্যদিয়েই সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা- জনগণের সামনে তুলে ধরবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বর্তমান এমপি-মন্ত্রীদের পাশাপাশি মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরও রাখা হবে এ সময়। সবকিছুই নিজে তীক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন শেখ হাসিনা। তিনি নিজেও ঈদের পর আবারও জেলা সফরে নামবেন এবং জনসভা করবেন।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি জেলা সফর ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরগুলোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে গতি সঞ্চার করতে নানা ধরনের সাংগঠনিক কর্মকা- পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে রয়েছে ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত সব স্তরে কর্মিসভা, প্রতিনিধি সভা, উঠান বৈঠক, পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিম মাহমুদ বলেন, বলেন, ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকেই আমাদের দলের নেতারা সংগঠনকে সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করার কাজ করে যাচ্ছেন। তৃণমূল নেতাদের প্রতিনিয়ত বলা হচ্ছে কীভাবে তাদের কাজ করতে হবে। ঈদের পরে আমরা পুরোপুরিভাবে সাংগঠনিক কাজে নেমে পড়ব। জেলা সফর শুরু করা হবে।
বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, ঈদের পর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার যাওয়ার আগে বা তিনি চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসার পর আমাদের যে মূল দাবি নির্বাচন সহায়ক সরকার সেই সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত ঘোষণা দেবেন। এরপর মূলত বিএনপি আন্দোলন ও নির্বাচনি প্রচারণা নিয়ে মাঠে নামবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান বলেছেন, ঈদের পরে আন্দোলন ও নির্বাচনি প্রচারণা একসঙ্গে চলবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আন্দোলনের কথা বলেছেন। একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির কাছে জনগণের দাবি রয়েছে। তাদের সেই দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভিশন-২০৩০ ও নির্বাচন সহায়ক সরকারের দাবি নিয়ে জনগণের কাছে যাবে বিএনপি।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনি প্রচারণা দুটোই চলবে। এমনিতেই সারাদেশে আমাদের সাংগঠনিক কর্মকা- এখানো চলমান। ঈদের পর তা আরো বাড়াবে। এছাড়া ভিশন ২০৩০ ও নির্বাচন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণার পর বিএনপি এসব নিয়ে সারাদেশে মানুষের কাছে যাবে। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন