ভারতকে হারানো অসম্ভব হবে কেন?
এস আর আলিফ
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলছে। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। তাদের ব্যাটিং লাইনআপন বরাবরের মতো এবারও শক্তিশালী। ফিল্ডিংটাও ভালো হচ্ছে। বোলিং অ্যাটাকও যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার তারা অনেক বেশি সমীহ জাগানো। সব মিলিয়ে হট ফেবারিট হিসেবেই তারা চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে অংশগ্রহণ করেছে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের মধ্যে দুই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে তারা। অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মোকাবিলা করে। বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হলে এক পয়েন্ট পায়। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইতিহাস সৃষ্টি করে অবিস্মরণীয় জয় পায় দলটি। বাংলাদেশের ব্যাটিং, বোলিং লাইনআপও যেকোনো শক্তিকে ধসিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। ব্যাটিং লাইনআপে অভিজ্ঞ ও নতুনদের নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ একটি দল। যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সক্ষম তারা। যার প্রমাণ ইতোমধ্যেই তারা রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে নিশ্চিত হওয়ার পরই নানা কথা আসছে। ক্রীড়াবিশ্লেষক থেকে সাধারণ সবাই সেই আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে। সবাই ভিন্ন ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছে। ভারতের নামিদামি ক্রিকেটারাও তা নিয়ে কথা বলছেন। বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। বাজে মন্তব্য করতেও ছাড়ছে না বলে গণমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে। তুমুল আলোচান বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে। অনেক প্রশ্ন। সবচেয়ে বেশি করে যে প্রশ্নটি আসছে তা হচ্ছেÑ ভারতের বিপক্ষে কেমন করবে বাংলাদেশ? জয় কি তাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব? অনেকে বলার চেষ্টা করছেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশ পাত্তা পাবে না। ভারতের ফাইনাল নিশ্চিত! ম্যাচের আগেই এমন নিশ্চিত ফল করে কি করে হয়, কী করে তা বলেন বোঝা মুশকিল। না বোঝা গেলেও বলে ফেলছেন। অতি আবেগে কিংবা বিশ্লেষণ ক্ষমতার অভাব যেকোনো কারণেই হোক। আমরা যদি বাংলাদেশÑভারতের মধ্যেকার সর্বশেষ ২০১২ সালের পর থেকে ২০১৬ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ পর্যন্ত দেখি তাহলে দেখবÑ তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট খেলেছি আমরা। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট আমরা খেলেছি। ২০১৬ সালের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে তো জয় নিজেরাই নিজেদের বঞ্চিত করেছি। শুধু ভারত কেন, ২০১২ সাল থেকে যদি বাংলাদেশের দলের পারফরমেন্স দেখি তাহলে দেখবÑ এই সময়ে প্রচুর ম্যাচ আমরা জিতেছি। সেটি দেশে কিংবা বিদেশে। কে নেই সেই তালিকায়? ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা। এই সময়ে সবগুলো বড় দলের বিরুদ্ধেই একাধিকবার জিতেছি। জয় তো এখন আমাদের নিয়মিত ঘটনা।
ভারতসহ বড় দলগুলোকে যেখানে আমরা নিয়মিত হারাচ্ছি সেখানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে এভাবে উড়িয়ে দেওয়া কি হিংসা থেকে? আমাদের উঠে আসার দৃশ্য কেউ কেউ দেখতে চান না বলেই কি এমনটি বলছেন? কিংবা খেলার আগেই খেলা শেষ করে দেওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছেন? কথা নয়, জবাবটা আমরা মাঠে দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করি। একটু ওয়েট করুন, শক্ত জবাবই পাবেন।
লেখক: কলামিস্ট/সম্পাদনা: আশিক রহমান