জঙ্গি দমন নিয়ে জনমনে যে সব প্রশ্ন
মেজর এম সরোয়ার হোসেন (অব.)
আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গি দমনে কাজ করছে। অনেক অভিযান পরিচালনা করছে। সফলতাও মিলছে। যদিও জঙ্গি অভিযান নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেকেরই। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়Ñ জঙ্গি অভিযানের সময় জঙ্গিদের সঙ্গে সুইসাইডাল ভেস্ট পাওয়া যাচ্ছে। এখানে আমাদের সন্দেহ হয়, সুইসাইডাল ভেস্ট যদি পাওয়া যায়, তারা যদি মরতেই চায়, কেউ যদি আত্মঘাতী হতেই চায়, সে সুইসাইডাল ভেস্ট নিয়ে বসে থাকবে কেন? সে তো অ্যাকশানে যাবে। যেমন উত্তরায় যে ঘটনা ঘটেছিল সেখানে র্যাব দাবি করেছিলÑ দুজন আত্মঘাতী এসেছিল দুজন প্রহরীকে আঘাত করতে। যখন প্রহরী চ্যালেঞ্জ করল তখন তারা পালিয়ে গেল। যদি সত্যিকার অর্থে এটা সুইসাইডাল ভেস্ট হয় তাহলে কেন এই দুজন প্রহরীকে টার্গেট করবে আর চ্যালেঞ্জের মুখে তারা কেনই বা পালিয়ে গেল? এখানে তো সন্দেহের তৈরি হয়। অনেক অভিভাবক অভিযোগ করছেন যে, ৬ মাস আগে যখন তার কাছের মানুষ বা স্বজনকে ধরে নিয়ে যায় তখন তার কোনো সমস্যা ছিল না, কিন্তু যখন তাদের মারার পর তাদেরকে জঙ্গি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো। এখানে রাষ্ট্রের যথাযথ ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
আমাদের মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল মানুষের কল্যাণের জন্য, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। সরকার বা রাষ্ট্রের পক্ষে কোনো বাহিনী মিথ্যার আশ্রয় নেবে না এবং কোনো সাজানো নাটক করবে না। তারা সত্য প্রতিষ্ঠা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, এখানে অনেক কিছু সাজানো হয়, অনেক কিছু পাতানো হয়। অনেকসময় এ সংক্রান্ত খবর পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে। এমন কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে রাষ্ট্রকে তা আগে নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তা বাহিনীকেই বের করতে হবে ঘটনার আগে পেছনের কারণ। সমস্যার মূলে গিয়ে সমাধান প্রয়াস চালাতে হবে।
পরিচিতি: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ও আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান