গণকটুলি ১৮০ পরিচ্ছন্ন পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন
শাকিল আহমেদ: পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য হাজারীবাগ ২২ নম্বর ওয়ার্ডের গণকটুলি কলোনিতে তিনটি ভবন নির্মাণ করেছে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)। উদ্বোধনের সময় প্রতীকী চাবি পাওয়ার দুই বছরেও ফ্ল্যাট বুঝে পাননি পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। থাকার যায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে ভাড়ায় থাকছে ১৮০ পরিবার। এতে তাদের আয়ের বেশিরভাগই চলে যাচ্ছে এই খাতে। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাদের।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বসবাসের জন্য রাজধানীতে সিটি করপোরেশন ১৩টি কলোনি নির্মাণ করে। ডিএসসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারীবাগের গণকটুলি সুইপার কলোনি সবচেয়ে বড়। সেখানে প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর বাস করে। ২০১২ সালে এই কলোনি ভেঙে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন তিনটি ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে ডিএসসিসি। ২০১৫ সালে এর কাজ শেষ হয়। গত বছরের ৯ জানুয়ারি তিনটি ছয়তলা ভবন ও একটি কমিউনিটি সেন্টারের উদ্বোধন করেন ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ভবন তিনটিতে ১৮০টি পরিবার বসবাস করতে পারবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বরাদ্দ ফ্ল্যাটের প্রতীকী চাবি দেওয়া হয়। প্রতীকী চাবি পেলেও দেড় বছরে এখনো ফ্ল্যাটে ঢোকার অনুমতি পাননি। এদিকে গত মঙ্গলবার ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নেতারা। এই দেড় বছরের মধ্যে দুই দফা তালিকা তৈরি করা হয়। প্রথমবার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দেওয়া তালিকা যাচাই-বাছাই করে কিছু বাদ দেওয়া হয়। পরে নতুন করে তালিকা করা হয়। দুই মাস আগে ডিএসসিসির সাবেক প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম কে বখতিয়ার তালিকার ক্লিয়ারেন্স দেন। বর্তমান প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা শফিকুল আলম গত ১৭ মে তালিকার ক্লিয়ারেন্সও দিয়েছেন। তার পরেও চোখের সামনে তৈরি ভবনে উঠতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন স্ক্যাভেঞ্জার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কেউ বাসা ভাড়া দিতে চায়না।
আমাদের কলোনির ঘর ভেঙে নতুন ভবন তৈরি কাজ ২০১৫ সালে শেষ হলেও আজ পর্যন্ত আমরা ভবনে ঢুকতে পারিনি। ২০১২ সাল থেকে এই কলোনির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বাইরে আছেন। বেতন যা পান তা ভাড়াতেই চলে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভবন উদ্বোধন হলেও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের তালিকা নিয়ে জটিলতা থাকায় কিছুটা দেরি হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ফ্ল্যাটের যাবতীয় কাজ শেষ হবে। এরপর যেকোনো একদিন ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে পারবো বলে আশা করছি। সম্পাদনা : হাসান আরিফ