নগরের ড্রেনেজ সিস্টেম আরও আধুনিক করতে হবে
অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান
বৃষ্টি হলেই ঢাকা শহর ডুবে যায়, চট্টগ্রামেরও প্রায় একই অবস্থা। এক দিনে ১৩০ মি.মি. বৃষ্টি হয়েছে ঢাকা শহরে। এক দিনে যদি এত বৃষ্টি হয় এবং আমরা যদি চাই এই পানি সঙ্গে সঙ্গে নিষ্কাশন হবে তাহলে ঢাকা শহরের সব রাস্তা ড্রেনে রূপান্তর করতে হবে! আমাদের পানি নিষ্কাশনের একটা অব্যবস্থাপনা তো আছেই। ওয়াসার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সুয়ারেজ সিস্টেম অনেকটাই দুর্বল। রাস্তার বেশিরভাগ জায়গা খানাখন্দে ভরা থাকে। এসব কারণেও মানুষের দুর্ভোগ বেশি হচ্ছে।
আমি নিউইয়র্ক শহরে দেখেছি বরফ পড়ে। আমাদের দেশে তো আর বরফ পড়ে না, এখানে বৃষ্টি পড়ে। নিউইয়র্কে বরফ পড়ার কারণে চার-পাঁচদিন মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। তিন চার ফুট পর্যন্ত বরফে রাস্তা আটকে থাকে। আমাদের যেটা হয়েছে, যেখানে পানি থাকার কথা ছিল সেখানে আমরা বসতি গড়ে তুলেছি। পানি নিষ্কাশনের রাস্তাগুলো বন্ধ করেছি। আমাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বলতে কিছু নেই। আমরা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলি। জনসচেতনতা নেই বললেই চলে। আমরা যা ব্যবহার করি তাই ড্রেনে ফেলে দিই। পলিথিন থেকে শুরু করে বোতল, এমনকি লেপ-তোষক, বালিশ পর্যন্ত সুয়ারেজের লাইনে পাওয়া যায়। এগুলো তো আমাদের সচেতনতার অভাবেই হচ্ছে। সব দোষ ড্রেন সিস্টেম আর ওয়াসাকে দেওয়া সঠিক হবে না। আমাদের নিজেদেরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ১৩০ মি.মি. বৃষ্টি হলে সেই পানি এক দুইদিন আটকে থাকার রেকর্ডও আছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। আমি নিউইয়র্ক এয়ারপোর্টে আটকে পড়েছিলাম এবং এক বাসায় থেকে তিনদিন বেরোতে পারিনি বরফের কারণে। পানিও যাচ্ছে না, বরফও যাচ্ছে না। আমাদের ধৈর্য্যরে অভাব আছে।
নগরকে জলাবদ্ধমুক্ত রাখতে হলে ড্রেনেজ সিস্টেম আরও আধুনিক করতে হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতাও বৃদ্ধি করতে হবে। এটা করা খুব জরুরি। বর্ষার আগেই এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে, মাথায় রাখতে হবে এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। নগরের জলাবদ্ধতার কারণে যেন বড় ধরনের কোনো ক্ষতি ও দুর্ভোগ পোহাতে না হয় নগরবাসীকে সেজন্য যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পরিচিতি: উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি/সম্পাদনা: আশিক রহমান