বাজেটে বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে কোনো উপায় নেই : অর্থ প্রতিমন্ত্রী
এনামুল হক : সাধারণ মানুষের ব্যবহার করা ৮০ ভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়বে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। বলেছেন, তবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে কোনো উপায় নেই। কারণ গ্যাস প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এ বছর থেকে কাতার থেকে তরল গ্যাস আমদানির কথা রয়েছে। এতে গ্যাসের দাম আরো বাড়বে। কারণ গ্রামে বসবাস করা মানুষ গ্যাস পাচ্ছে না। এ বৈষম্য দূর করতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন মাথা পিছু আয় বেড়েছে। বিদ্যুতের দাম একটু বাড়লে সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না। গতকাল টিভিএন নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক হিসাবে ১ লাখ পর্যন্ত কোনো ধরনের আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। তিনি বলেন, আমরা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক চিরদিনের জন্য মুক্ত করেছি। এরপর ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করেছি। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের হিসাবে আবগারি শুল্ক আদায় নতুন কিছু নয়। এই শুল্ক ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু হয়েছে, যা ২০০৯ সার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট ১ লাখ পর্যন্ত কোনো ধরনের আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। এম এ মান্নান বলেন, বাজেটে দেশের মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। বাজেটে এখন কোনো ভীতি নেই। তবে সমালোচনা রয়েছে। সকল আলোচনা-সমালোচনা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বড় বাজেটের প্রধান অর্থ আদায় হয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে। আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) থেকে প্রতিষ্ঠানটি অর্থ আদায় করে। বর্তমানে ভ্যাট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। মোবাইল ফোনে অ্যাপ ডাউনলোড করে ভোক্তারা পণ্য ও সেবার জন্য ভ্যাট দিতে পারবেন। এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজেটে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাস্তবায়ন। বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা রয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। আমরা চাই এক ব্যক্তি একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু আমরা দেখেছি একজন মানুষ সাত থেকে আটটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। তা ঠিক নয়। বাজেটের ঘাটতি নিয়ে কথা হচ্ছে। এটা নিয়ে চিন্তুা করার কিছু নেই। আমাদের অর্থনীতির ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে বেসরকারি খাত। আমরা চাইছি স্বাবলম্বী হব। আমরা সরকারি ও বেসরকারিরা এক সঙ্গে কাজ করব।
এবারের বাজেটে নারী-পুরুষে কোনো পার্থক্য করা হয়নি জানিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগের বাজেটগুলোতে নারী উন্নয়নে বাজেট রাখা হলেও সে অর্থ ফেরত এসেছে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এ বাজেটে নেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এবারের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেটে দেশজ কৃষিসামগ্রী উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে বিদেশি সামগ্রীর ওপর ভ্যাট আরো করা হয়েছে। এত দেশীয় উদ্যোক্তারাই উপকৃত হবেন বলে জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন