বিক্ষোভের মধ্যে চার্চ ত্যাগ করলেন থেরেসা মে
রবি মোহাম্মদ : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বিক্ষোভের মুখে চার্চ ত্যাগ করেছেন। দরজা ও জানালা দিয়ে তার বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করছিল বিক্ষোভকারীরা। নর্থ ক্যাসিংটনের সেন্ট ক্লিমেন্টে চার্চে মে গ্রিনফেল টাওয়ারের ভিকটিম, স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বেচ্চাসেবকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। গ্রিনফেল টাওয়ারে আগুন লাগার তিনদিন পরে ভিকটিমদের সঙ্গে দেখা করতে আসায় থেরেসা মে মানবতা দেখাতে ব্যর্থ বলে অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের প্রহরায় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িকে রাখা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা প্রায় আধা ঘন্টা কেসিংটন টাউন হলের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির ও প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র পদত্যাগ দাবি করেন।
বিক্ষুদ্ধ জনতার ঘৃণার কারণে ধীরে ধীরে চার্চ ত্যাগ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। বিক্ষুদ্ধ জনতা তার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে। একজন নারী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং থেরেসা মেকে খুনী বলে আখ্যা দেন। আর একজন পুরুষ চিৎকার করে বলেন কেন এতো মানুষ প্রাণ হারালো জবাব দিন প্রধানমন্ত্রী জবাব দিন। ওই সময় কালো প্রাইভেটকারে করে পুলিশী পাহারায় চার্চ ত্যাহ করে চলে যান থেরেসা মে।
এর আগে লন্ডনের চেলসিয়া ও ওয়েস্টমিনিস্টার হামালায় হতাহতদের দেখতে হাসপাতালে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় ব্যয় করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে লন্ডনের গ্রিনফেল টাওয়ারের দূর্ঘটনায় আক্রান্তদের তাৎক্ষণিকভাবে দেখতে আসেননি। তিনি কেবল জরুরী বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আক্রান্তদের সঙ্গে নয়। তাতে তীব্র সমালোচনায় পরেন মে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে ভিকটিমদের দেখতে না আসার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের পক্ষ থেকে। ক্যাবিনেট মিনিস্টার এন্ড্রো লিডসাম স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশের জন্য নিন্দা জানান। বলেন, আগুনে আক্রান্তদের না দেখতে যাওয়ার কারণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী খুবই শোকাহত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুণ ধরে এখন পর্যন্ত ৩০ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষে পুড়ে যাওয়া সামগ্রী ও সেখানে শনাক্ত করতে না পারা মরদেহ থাকার শঙ্কাও রয়েছে। তবে ভবনের অভ্যন্তরে কারও জীবিত থাকার আশা নেই আর।
পুলিশের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, নিহতদের সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা করছে লন্ডনবাসী। হাসপাতালে থাকা অন্তত ৩০ জনের মধ্যে বেশকিছু মানুষ রয়েছেন মৃত্যুশঙ্কায়। তাই সবমিলে এ ঘটনায় শতাধিক প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করছে লন্ডনবাসী।
ভয়াবহ এ আগুনের ঘটনাকে স্বাভাবিক দুর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না লন্ডনের নাগরিকেরা। দুর্গত ও আহতদের দেখতে না যাওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকাও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে তাদের।
চতুর্থ তলায় লাগা আগুন কী করে এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারল, তার জবাব চাইছেন তারা। লন্ডনবাসীর দাবি, এ বিপর্যয়ে যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট ও বিবিসি অবলম্বনে