পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে এমন এলাকাগুলোর পূর্ণাঙ্গ তালিকা ছিল না প্রশাসনের কাছে
গাজী মিরান : চলতি মাসে পার্বত্য এলাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামীতে আরও বাড়বে বৃষ্টিপাত। ঝুঁকিতে থাকবে দেশের পাহাড়ি এলাকা। এমন অবস্থায় পাহাড়ের মাটি, গাছ কাটা ও অবৈধ বসতি নির্মাণ বন্ধ না হলে আগামীতে আরও ভয়াবহ ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এবারে পাহাড়ধসের ঝুঁকি রয়েছে এমন এলাকাগুলোর পূর্ণাঙ্গ তালিকা ছিলনা পার্বত্য জেলা প্রশাসনের কাছে। তাই প্রাণহানি ঠেকাতে সামগ্রিক প্রস্তুতিও ছিল না তাদের।
পার্বত্য এলাকায় ৮০র দশক থেকে শুরু হয় বসতি স্থাপন। যার ফলে কাটা হচ্ছে পাহাড়ের মাটি ও গাছ। এইসব কারণে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলেই ধসে পড়ছে পাহাড়। প্রায় ১ দশক ধরে বৃষ্টিপাতে পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ধসে পড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। তবে সবচেয়ে বেশি প্রাণ গেছে এবারের ধসে। এতে মারা গেছে ১৫০ জন। এর আগে ২০০৭ সালে পাহাড়ধসে মারা গিয়েছিল ১২৭ জন। চলতি মাসেই পার্বত্য এলাকায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। ৩৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাঙ্গামাটিতে।
এই বিষয়ে ভূতত্ত্ব জরিপ অধিদপ্তরে পরিচালক রেশাদ মোহাম্মদ ইকরাম আলী বলেন, দিন যত যাচ্ছে পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকির পরিমাণও বাড়ছে। সামনে আও বাড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক খালিদ মাহুমদ বলেন, শুধু মাত্র মাইকিং করে মানুষকে এই ধস থেকে বাঁচানো যাবে না। আমাদের যেসকল এলাকাগুলো ঝুঁকিতে আছে সেইসকল এলাকাগুলোতে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পাহাড়ধস ঠেকাতে এবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামীতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানালেন।
দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এস এম মাকসুদ মনে করেন, ভূমিধসের আগেই মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি এমন দুর্যোগ সম্পকে পাহাড়ি মানুষকে সচেতন করতে হবে। এই কাজটা করতে পারলে আমার মনে হয় আগামীতে এমন প্রাণহানি হবেনা। সূত্র : ডিবিসি