চিকিৎসকদের ধর্মঘটে রোগীদের ভোগান্তি
রিকু আমির : বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)- এর আহ্বানে প্রাইভেট প্রাকটিস থেকে বিরত থাকলেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সেন্ট্রাল হাসপাতাল ইস্যু কেন্দ্র করে গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এই কর্মসূচির জেরে রোগীরা পড়েন ভোগান্তি ও হতাশায়। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আগতরা। তবে বিএমএর নির্দেশনা আছেÑ জরুরি চিকিৎসা অব্যহত রাখার। একই ইস্যুতে গত ২৩ মে একই কর্মসূচি পালন করেন চিকিৎসকরা।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্রাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ীÑ বর্তমানে দেশে প্রায় ৭০ হাজার চিকিৎসক আছেন। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বেসরকারিখাতে কর্মরত। কর্মসূচি দেওয়া হয়েছেÑ প্রাইভেট চেম্বারের ক্ষেত্রে। ৭০ হাজার চিকিৎসকের ৩০ শতাংশ সরকারি চিকিৎসক বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রাইভেট চেম্বার করেন। বেসরকারি খাতের কেউ হাসপাতাল-ক্লিনিকে চাকরি করেন, কেউ শুধুমাত্র প্রাইভেট চেম্বার করেন। ৭০ হাজার চিকিৎসকের প্রায় সবাই প্রাইভেট প্রাকটিস করেন বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে যেসব চিকিৎসকরা স্থায়ীভাবে চাকরি করেন, তারা ঠিকই কাজ করেছেন। কিন্তু সেসব হাসপাতাল-ক্লিনিকে যারা শুধুমাত্র প্রাকটিসের উদ্দেশে বসেন, তারা কেউ বসেননি। ঢাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার ফার্মেসিতেও যারা চেম্বার করেন, তারাও বিরত থেকেছেন।
কলাবাগান বশির উদ্দিন রোডে পদ্মা ফার্মেসিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. খায়রুল বাশারের চেম্বার। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি প্রাকটিস থেকে বিরত থেকেছেন। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন তিনি ৮-১০ জন রোগী চেম্বারে দেখেন।
বীর উত্তম সিআর দত্ত রোডে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে চেম্বার করেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ। শুক্রবার বাদে তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ১০-১৫ জন রোগী দেখেন। তিনিও গতকাল প্রাকটিস থেকে বিরত থেকেছেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল প্রাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, বিএমএর নিদের্শনা আছে, জরুরি ক্ষেত্রে রোগী দেখার। তিনি নিজেও বিএমএর ডাকে সাড়া দিয়েছেন।
গতকাল বিকালে গ্রিন রোডে গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখা গেছে, অন্তত ১০ জন চিকিৎসক আছেন যারা বিএসএমএমইউর চিকিৎসক। তারা কেউ-ই প্রাকটিসে বসেননি। তাদের কাছে আসা রোগীরা অস্বস্তি নিয়ে বসে ছিলেন। কুমিল্লা থেকে আসা রোগী ইমতিয়াজ বলেন, কী করব? আজ হোটেল ভাড়া করে থাকতে হবে। এটা আমার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী