হুমকির মুখে সাতক্ষীরার জেয়ালা গ্রামের প্রাণিবৈচিত্র্য
শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না,সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের সুপ্রাচীন একটি গ্রাম ‘জেয়ালা’। চারদিকে সবুজে ঘেরা এই গ্রামে গোয়াল ভরা গরু, গোলা ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ও উঠান ভরা শাক-সবজি ছিল। সুখে-শান্তিতেই চলছিল প্রাণিবৈচিত্র্য সমৃদ্ধ জেয়ালার দুই শতাধিক পরিবারের জীবন-জীবিকা। কিন্তু এই সুখ-শান্তি যেন কপালে সইলো না তাদের। কারণ, ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশংকায় চিন্তিত এখানকার প্রতিটি মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, জেয়ালা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গরু-ছাগল ও হাস-মুরগি পালন করা হতো। উঠানে উঠানে ছিল শাক-সবজির সমারোহ। গ্রামে ৫০-৬০টির বেশি গোলা ছিল। শত শত প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ওষুধি গাছে সবুজে ঘেরা ছিল চারদিক। কিন্তু গত বর্ষা মৌসুমে পার্শ্ববর্তী বদ্দীপুর কলোনী, মাছখোলা ও দামারপোতা গ্রামের ন্যায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেয়ালা গ্রামের প্রাণিবৈচিত্র্যের। স্থানীয় কৃষক ইমদাদুল হক জানান, তার পাঁচ বিঘার ভিটা বাড়িতে আম, জাম, কাঁঠাল, খেজুর, নারকেল, তাল, সুপারিসহ কয়েক প্রজাতির দুই শতাধিক ফল গাছ ছিল। ছিল সজনে গাছও। গোয়ালে গরু ছিল। বর্ষাকালেও বাড়ির উঠানে লাগাতেন শাক-সবজি। কিন্তু গত বর্ষা মৌসুমে তার বাড়ির উঠানে পানি ওঠে। জলাবদ্ধতায় মরে যায় বেশ কয়েকটি কাঠাল গাছ। মরে যায় সজনে গাছগুলোও। গোয়াল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর তার পক্ষে গরু পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, গত বছর তার ধানের গোলায় পানি উঠেছিল। রাখার জায়গা ছিল না হাস-মুরগি। ভেসে গিয়েছিল দুটি পুকুর। বাড়ির উঠান এবছর মাটি তুলে উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। গ্রীষ্মের শেষ দিকের বৃষ্টিতেই উঠানে পানি জমতে শুরু করেছে।