জাতীয় অনলাইন নীতিমালা ২০১৭ খসড়া অনুমোদন মন্ত্রিসভায় অনলাইন গণমাধ্যমকে সম্প্রচার কমিশন থেকে নিবন্ধন নিতে হবে
তরিকুল ইসলাম সুমন : অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে সম্প্রচার কমিশনের কাছ থেকে নিবন্ধন নেওয়ার বিধান রেখে ‘জাতীয় অনলাইন নীতিমালা, ২০১৭ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ অনুমোদনের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা,২০১৪’ অনুযায়ী সব সম্প্রচার মাধ্যমকে সম্প্রচার কমিশনের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। কমিশন সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর মনিটরিংয়ের কাজও করবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের যে গণমাধ্যম নীতিমালা রয়েছে তার আলোকেই এটা করা হয়েছে। অনলাইন মিডিয়া যাতে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করে এরই গাইডলাইন হিসেবে দেওয়া আছে। অনলাইন গণমাধ্যমকে কমিশনের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। কমিশন হচ্ছে প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশন। জাতীয় সম্প্রচার আইন যখন পাস হবে তখন কমিশন এক্সিসটেন্সে (দৃশ্যমান) চলে আসবে।
‘যারা পত্রিকা বের করে তাদের যদি অনলাইন ভার্সন প্রয়োজন হয় তবে তাদের আর নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে না। তারা যে ১৯৭৩ সালের প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন আইনে লাইসেন্স নিয়েছে সেটা কন্টিনিউ করবেন। তবে এই তথ্যটা কমিশনকে জানাতে হবে। নির্দিষ্ট আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত বলে বেসরকারি টেলিভিশনগুলোকেও অনলাইন ভার্সনের জন্য কমিশনের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে না বলেও জানান শফিউল আলম।
নিবন্ধন ফি, অনলাইন গণমাধ্যমের পরিচালনা পদ্ধতি, সংক্ষুদ্ধ মহলের অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে কমিশন। কমিশনের সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অভিযোগ জানানো পারবে। অভিযোগ ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। কমিশন শুনানি করার পর নির্দেশনা জারি ও জরিমানাও করতে পারবে।
শফিউল আলম বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুক্ত, ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অনুভূতি, সংবাদ ও তথ্যমূলক অনুষ্ঠান, উন্নয়ন ও বিনোদনমূলক কর্মকা-, শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বক্তব্য, পণ্য, পণ্যের মান ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, শিশু ও নারীর অধিকার বিষয়ে ২০১৪ সালের জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালায় যে বিধান আছে সেই বিধান এখানে প্রযোজ্য হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলাদেশের ভূখন্ড থেকে হোস্টিং করা বাংলা, ইংরেজি বা অন্য কোন ভাষায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনেটভিত্তিক রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সম্প্রচারের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত স্থির ও চলমান চিত্র, ধ্বনি ও লেখা বা মাল্টিমিডিয়ার অন্য কোন রূপে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারকারী বাংলাদেশি নাগরিক বা বাংলাদেশে নিবন্ধিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। বর্তমানে কার্যক্রম চালানো সব অনলাইকেই নিবন্ধন নিতে হবে। কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয় এর ব্যবস্থাপনায় অনলাইন পরিচালিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইতোমধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ে এক হাজার অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এরমধ্যে কিছু হয়তো অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্র বিরোধী কোন কাজের জন্য নীতিমালায় সরাসরি কিছু বলা না থাকলেও দেশে প্রচলিত আইনে বিচার করা হবে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি