চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের কারসাজি
রাজেকুজ্জামান রতন
চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পুরোটাই ব্যবসায়ীদের কারসাজি। কারণ বোরো ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তা প্রধানত হাওর অঞ্চলে। হাওরে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ লাখ টন, সেটার প্রায় ৯০% ক্ষতি হয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু গোটা দেশের বোরো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ৯১ লাখ টন। হাওরাঞ্চলে ধানের ক্ষতি হয়েছে বটে, কিন্তু এই মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির যথার্থ কোনো কারণ নেই। কারণ এই চালের যতটুকু ঘাটতি পড়বে সেটা মৌসুমের শেষে গিয়ে। ফলে উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে যে চালের দামটা বাড়িয়ে দিল এটা পুরোটাই একটা ব্যবসায়ী মহলের কারসাজি। বিশেষ করে মোটা চালের দাম, যেটা সরকারি ক্রয় মূল্য ৩৪ টাকা সেটা বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫২ টাকা পর্যন্ত। ঈদের আগেই হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণের পকেট থেকে আত্মসাৎ করার জন্য সুকৌশলে একটা সিন্ডিকেট চালের দামটা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে চালের মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে সিন্ডিকেটের যেমন কারসাজি আছে, সরকারের উদাসীনতা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবহেলাও আছে।
আর এর ফলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়টা অস্বাভাবিক বেড়ে গেল চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। এটা রোধ করার জন্য সরকারের একটা শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা দরকার ছিল যে, কেন চালের দামটা বাড়ল? এ ব্যাপারে একটা অনুসন্ধান করে সরকারের একটা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু সে ব্যাপারে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। বরং সরকার যেটা বলছে, চাল আমদানি করতে ভিয়েতনাম যাচ্ছে। সমস্যার কারণ উদঘাটন না করে বরং জনগণের দৃষ্টিটাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার একটা চেষ্টা সরকারি মহল থেকে করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কথা নয়, এ বিষয়ে কাজ করা উচিত সরকারের। সংকট সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলেই মনে করি আমি।
পরিচিতি: কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাসদ
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমান