ঈদ কেনাকাটায় স্ত্রীকে কী দিলেন?
হাফসা ইসলাম: সামিয়ার বিয়ে হলো একটি বড় পরিবারে। সেই সংসারের বড় বউ। বয়সটাও খুব বেশি না তার, ১৭ বা ১৮ এর মাঝামাঝি। তবুও সে অল্পতেই মানিয়ে নিয়েছে সব। কারণ একটাই সে তার স্বামীর ভালবাসায় ব্যাকুল। তিনিও অনেক ভালবাসেন সামিয়াকে। তাই ও সহজেই ত্যাগ স্বীকার করা শিখে গেছে।
ঈদ পর্ব এলেই শুরু হয় বাড়িতে কাপড় কেনার ধুম। সবার জন্য কেনাকাটা করতে করতে হাপিয়ে ওঠে ওর সামিয়ার স্বামী। সামিয়া বুঝতে পারে তার উপর এখন অনেক চাপ হয়ে যাচ্ছে। যখন ওকে জিগ্যেস করে তোমার জন্য কি কিনব? ও অনায়াসে বলে এবার আমার কাপড় লাগবে না। আমার যথেষ্ঠ আছে। এতেই চলবে এই ঈদ। তার স্বামীও খুশি হয়ে যায় এই ভেবে যে মেয়েটার যথেষ্ঠ চাহিদা কম! তার কোন কসমেটিকের প্রয়োজন হয় না, মেকাপের প্রয়োজন হয় না, সবাই কে খাইয়ে খাবার থাকলে খায়, না থাকলে না খেয়ে চুপচাপ অন্য কাজ করে। মুখে কোন সময় না শোকরিয়া নেই। এটাই স্বামীভক্ত ও আল্লাহ ভিরু নারীদের কথা ) একটা সময় শাশুড়ি ননদরাও দেখে আসলে ওর তো কোন চাহিদাই নেই। এমন বউ ই তো আমরা চেয়েছি। বাস্তবতা হচ্ছে, চাহিদা ছাড়া কোন মানুষ হয় না, তবে স্বামীর উপর যাতে একটু চাপ কম হয় সেই জন্যই সে চাহিদা হীন মানুষ হয়ে যায়। পরিবারের অন্যদের দাবি মেটাতে সে এমনই অভিনয় করে যায় প্রতিনিয়ত। একটি মেয়ে যখন সংসারের বড় বউ হয়ে ঘরে আসে তখন তাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, সকলের মন রক্ষা করে চলতে হয়।
বিশেষ করে যারা বুদ্ধিমতি তাদের তো কোন তুলনাই হয় না, তাই বলে আমরা যেন তাদের অবহেলা না করি। অনেক মেয়ে আছে যারা লজ্জায় কিছু চাইতে পারে না। যে মেয়েটা আজ বিবেক খাটিয়ে নিজের প্রয়োজনকে গোপন রেখে সংসার ও স্বামীর দিকে তাকিয়ে এত ত্যাগ স্বীকার করল আমরা যেন তার প্রয়োজন পূর্ণ করতে বিবেকহীন না হয়ে যাই। যে মেয়ে সংসারের অন্যান্য সদস্যদের চাহিদা পূর্ণ করার জন্য নিজের সব চাওয়া পাওয়াকে চাপা মাটি দিয়ে কবর দিল সেই মেয়েটার জন্য কি আমাদের কিছুই করার নেই? এই জন্য যারা সংসারে বড় থাকেন, তাদের সবারই সব দিকে খেয়াল রাখা অতীব দরকার।