নড়াইলে লোহাগড়ায় খাল খনন করায় ১৫ গ্রামের কৃষকের মুখে হাসি
বাসস : জেলার লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম এলাকায় সমতল ভূমিতে খাল খনন করায় ৫টি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে এলাকার অন্তত ২০ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছে। এছাড়া গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে। ধান ও সবজি উৎপাদন এবং পাট জাগ দেয়াসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত্রে এ খালের পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে খালটি খনন করা হয়েছে। এর ফলে উপজেলার নোয়াগ্রাম, লাহুড়িয়া, নলদী, জয়পুর ও কাশিপুর ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন। এই পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ১২ কিলোমিটার বিলের কৃষি জমিতে সেচ এবং পানি নিষ্কাশন সুবিধা পাবেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা বলে জানাগেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে লোহাগড়ার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের শামুখোলা-সুলটিয়া খাল প্রায় ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খালটি খনন করা হয়েছে। খালের দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার, প্রস্থতা ৬০ ফুট ও গভীরতা ১২ ফুট। কাজটি মে মাসের প্রথম দিকে শুরু হয়ে ২০জুনের মধ্যে শেষ হয়েছে। খালটি নবগঙ্গা নদীর ধোপাদাহ এলাকায় মিলিত হয়েছে। নামকরণ করা হয়েছে ‘দোদাঁড়িয়া খাল’।
নোয়াগ্রামের হারুন মোল্যা জানান, এলাকাবাসী স্বেচ্ছায় জমিদানের মধ্য দিয়ে দোদঁড়িয়া খাল খনন করা হয়েছে। এতে এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক উপকৃত হবেন। একই এলাকার সৈয়দ তসলিম বলেন, এতোদিন এলাকার কৃষকেরা গভীর নলকূল থেকে পানি উত্তোলন করে ফসল ফলাত; এতে উৎপাদন খরচ বেশি হতো। খরা মৌসুমে সেচপাম্পে প্রয়োজন মতো পানি না পাওয়া অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। এখন খালে পানি পাওয়ার সেচ সমস্যার সমাধান হয়েছে।
শুলটিয়া গ্রামের শাহনেওয়াজ বলেন, খাল খননের আগে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে; এতে ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ সময়ের অপচয় হতো। এ বছর আমরা এই খালে সহজে পাট জাগ দিতে পারব।
হৃদয় জানান, এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ার খালে পুটি, টেংরা, কৈ, শিং, টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট মাছ দেখা যাচ্ছে। নোয়াগ্রামের রেবেকা খাতুন বলেন, বাড়ির পাশে খাল খনন করায় পানির কষ্ট দূর হয়েছে। গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি হাঁস পালনে সুবিধা হয়েছে। জাহিদুল ও কামাল জানান, ধান, পাট, সবজিসহ বিলের বিভিন্ন ফসল বাড়িতে আনার সুবিধার জন্য খালে ব্রিজ নির্মাণ এবং সংযোগ রাস্তা প্রয়োজন।