মক্কায় আত্মঘাতী বোমাহামলাকারী নিহত
রাশিদ রিয়াজ : পবিত্র মক্কা নগরীতে এক বোমা হামলাকারী পুলিশের অভিযানের সময় নিজেকে বোমাবিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছে। এঘটনায় ওই ভবনটি বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ১১ জন আহত হয়েছে। সৌদি আরব দাবি করছে কাবা ঘরে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি জানায়, একটি ভবন ঘিরে পুলিশের অভিযানের সময় একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সময় ওই ভবনটি বিধ্বস্ত হয়ে ১১জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫ সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সৌদি স্বরাষ্ট্র দপ্তর বলছে, মুসলিমদের পবিত্র স্থান, মক্কার গ্রান্ড মসজিদের কাছেই একটি সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়া হয়েছে। এখানেই মুসলমানদের পবিত্র ঘর কাবা অবস্থিত। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জোটে রয়েছে সৌদি আরব এবং সিরিয়া ও ইরাকের অন্য জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধেও দেশটি লড়াই করছে।
সিএনএন বলছে, আত্মঘাতী ওই বোমা হামলাকারী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করে। পুলিশকে লক্ষ্য করে সে গুলিও চালায়। বোমাবিস্ফোরণে ভবনটির আংশিক ধসে পড়ায় ৬ জন প্রবাসী আহত হয় এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ নিরাপত্তা রক্ষী সামান্য আহত হয়েছে বলে সিএনএন’কে জানিয়েছে লন্ডনের এক প্রেস কর্মকর্তা। তবে এ ঘটনায় ১ জন নারী সহ সন্দেহভাজন ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সৌদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলছে, ৩ সন্ত্রাসী দলের ২টি মক্কায় ও আরেকটি জেদ্দা ভিত্তিক যারা এ ধরনের হামলা পরিকল্পনা করে।
আরব নিউজ বলছে, শুক্রবার নিরাপত্তা বাহিনী সফলতার সাথে একটি সন্ত্রাসী হামলা নস্যাৎ করে দিয়েছে যারা গ্রান্ড মসজিদে হামলার পরিকল্পনা করছিল। সন্ত্রাস হামলার পরিকল্পনা করা হয় দুটি ¯’ান থেকে যেখান থেকে কাবা ঘর খুব কাছেই। এর একটি হচ্ছে আসিলা ও অন্যটি আজইয়াদ আল-মাসাফি। যে ভবনটিতে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয় তার চারপাশ থেকে তাকে আত্মসমর্পণের জন্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বারবার আহবান জানাতে থাকে। ভবনটি ছিল তিনতলা। এর আগে শুক্রবার সকালে আল-আসিলা এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এবং গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি ওই ভবনে সন্ত্রাসীদের অবস্থানের কথা জানায়। ওই ভবনটি আজইয়াদ আল-মাসাফি এলাকার পাশে আল-সাফওয়া হোটেলের পিছনে।
এদিকে জেদ্দায় আরেক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে সৌদি আরবে স্পেশাল এমার্জেন্সি ফোর্সের সদস্যরা। সন্দেহভাজন এ ব্যক্তিকে অনুসরণের পর দক্ষিণ জেদ্দার একটি গ্যাস স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে সৌদি গোয়েন্দা পুলিশ। তার বাড়ি তল্লাশী করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রমজান মাসের শেষের দিকে সারা বিশ্ব থেকে এখন মক্কায় সমবেত হয়েছেন লাখ লাখ মুসলমান। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে মদিনায় মসজিদে নবীর কাছে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪ নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছিলেন। সৌদি আরবে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনার এসব ঘটনার দায় স্বীকার করে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠি। এসব হামলার বেশিরভাগ চালানো হয়েছে দেশটির শিয়া সংখ্যালঘু আর নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর।