বিদআতীদের সাথে ওঠা-বসা করার বিষয়ে কি বলে ইসলাম
ইমরান হুসঈন: রাসূল (সা.) বিদআতপন্থীদের সাথে ওঠা-বসা করতে নিষেধ করেছেন । কেননা, তাদের সঙ্গ দেয়া এবং তাদের সাথে ওঠা-বসা করার দ্বারাও সমাজে বিদআত প্রচার-প্রসার লাভ করে। তিনি তাদেরকে অসৎ ও গোমরাহ মানুষ বলে আখ্যায়িত করেছেন । কেননা, রাসুল (সা.) বলেছেন, সকল বিদয়াত গোমরাহী এবং সকল গোমরাহীর ঠিকানা জাহান্নাম।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, যালিমরা সে দিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে সৎপথ অবলম্বন করতাম। হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করতাম। আমার নিকট উপদেশ পৌঁছার পর সে আমাকে বিভ্রান্ত করেছিল । শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক। (সূরা ফুরকান, আয়াত ২৭-২৯)
আর অসৎ লোকদের সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই সৎসঙ্গ ও অসৎসঙ্গের দৃষ্টান্ত হলো মিশক, আম্বর বহনকারী ও কামারের ন্যায়। অতঃপর মিশক বহনকারী হয়ত তোমাকে কিছু দেবে অথবা তুমি তার থেকে কিছু কিনবে। আর তা না হলে কমপক্ষে তার থেকে সুঘ্রাণযুক্ত বাতাস পাবে। আর কামার হাপরে ফুৎকারের মাধ্যমে হয়ত তোমার কাপড় জ্বালিয়ে দেবে অথবা তার থেকে তুমি দুর্গন্ধময় বাতাস পাবে। (বোখারি ও মুসলিম)
সত্য গোপন করা নিষেধ: সত্য গোপন করাই লোক সমাজে ভ্রান্তি ও ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টির অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত হয় । এ-সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা আছে । আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আমি যে সকল স্পষ্ট নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি, তা মানুষের নিকট প্রকাশ করার পরও যারা ঐ সকল বিষয় গোপন করে, আল্লাহ তাদের উপর লানত করেন এবং অভিসম্পাতকারীগণও লানত করে থাকেন। কিন্তু তারাই লানত থেকে মুক্ত যারা তাওবা করেছে, নিজেদের সংশোধন করেছে ও সঠিক বিষয় প্রকাশ করেছে। আমি তাদের তাওবা কবুল করি। আমিই তওবা গ্রহণকারী ও দয়ালু। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৫৯-১৬০)
আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ যা কিতাবে অবতীর্ণ করেছেন তা যারা গোপন করে ও সামান্য মূল্যে বিক্রি করে, তারা স্ব-স্ব উদরে অগ্নি ছাড়া আর কিছুই ভক্ষণ করে না। কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না এবং এদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৪)
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, যদি কাউকে এমন বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয় যা সে জানে অতঃপর সে তা গোপন করে, তাহলে তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের লাগাম পরানো হবে। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)